ডিজিটাল ডেস্ক, ৪ অগাস্ট : ওভালে দুর্দান্ত ও অবিশ্বাস্য এক জয় ছিনিয়ে নিল টিম ইন্ডিয়া (India Vs England Test Series)। পেস আক্রমণের দাপটে ইংল্যান্ডকে ছারখার করে মাত্র ৬ রানে জয় ছিনতাই করল শুভমান গিলের নেতৃত্বাধীন ‘নতুন ভারত’। এই জয়ের সঙ্গে সিরিজও ড্র করে সম্মানজনকভাবে ইংল্যান্ড সফর শেষ করল টিম ইন্ডিয়া।
পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ জুড়ে নাটকীয়তা ছিল চরমে—প্রতিটি ম্যাচেই ভাগ্যের দোলাচল চলেছে পেন্ডুলামের মতো। প্রথম টেস্টে হারের ধাক্কা কাটিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে ঘুরে দাঁড়ায় শুভমান গিলের ভারত। তবে তৃতীয় টেস্টে আবার পিছিয়ে পড়ে দল। চতুর্থ টেস্টে কোনও ফল না হওয়ায় পঞ্চম তথা শেষ টেস্টে ভারত নামে ১-২ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে। ওভালে সেই রোমাঞ্চকর শেষ টেস্ট জিতে সিরিজে সমতা ফেরাল টিম ইন্ডিয়া।
এই টেস্টে ঘটনার ঘনঘটা ছিল চোখে পড়ার মতো। অধিনায়ক বেন স্টোকসের অনুপস্থিতিতে ওলি পোপের নেতৃত্বে মাঠে নামে ইংল্যান্ড। অন্যদিকে, আগের চার ম্যাচের মতো এবারও টসে হারেন ভারতের অধিনায়ক শুভমান গিল। প্রথমে ব্যাট করে ভারতীয় দল প্রথম ইনিংসে তোলে মাত্র ২২৪ রান। জবাবে ইংল্যান্ড করে ২৪৭, ফলে প্রথম ইনিংস শেষে ইংল্যান্ড এগিয়ে ছিল ২৩ রানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের হয়ে যশস্বী জয়সওয়ালের দুরন্ত শতরান, রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দরের অর্ধশতরানের দৌলতে দল তোলে ৩৯৬ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ড একটা সময় পর্যন্ত এগিয়ে থাকলেও, চতুর্থ দিনের শেষ দিক থেকে ম্যাচের রাশ পুরোপুরি ঘুরিয়ে দেন ভারতের দুই পেসার মহম্মদ সিরাজ ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। পঞ্চম দিনে সিরাজ তুলে নেন ৩টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট, কৃষ্ণ নেন একটি, আর সেই চাপেই ভেঙে পড়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ। এই ঐতিহাসিক জয়ে সিরিজ ২-২ সমতায় শেষ করে সম্মানজনকভাবে ইংল্যান্ড সফর শেষ করল ভারত।
ওভাল টেস্টে উত্তেজনা ও নাটকীয়তার অভাব ছিল না। ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকসকে ছাড়াই ওলি পোপের নেতৃত্বে নামে স্বাগতিক দল। ভারতের অধিনায়ক শুভমান গিল এই ম্যাচেও টসে জেতেননি, যেমনটা আগের চার টেস্টেও হয়েছিল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত প্রথম ইনিংসে তোলে ২২৪ রান। জবাবে ইংল্যান্ড তাদের ইনিংস শেষ করে ২৪৭ রানে, ফলে স্বল্প ব্যবধানে এগিয়ে যায় তারা।
ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং দাপট ফেরে। যশস্বী জয়সওয়ালের দুরন্ত শতরান, সঙ্গে রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দরের অর্ধ-শতকে ভর করে ভারত তোলে ৩৯৬ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ড একসময় জয়ের দিকে এগোচ্ছিল। তবে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় চতুর্থ দিনের শেষ ভাগ থেকে। পঞ্চম দিনে ওভালের পিচ দখলে নেন ভারতের দুই ফাস্ট বোলার মহম্মদ সিরাজ ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। সিরাজ তুলে নেন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট, কৃষ্ণ যোগ করেন আরও একটি। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত ছিল ভাঙা হাত নিয়ে ক্রিস ওকসের ব্যাট করতে নামা। যদিও তিনি আউট হননি, কিন্তু ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে গেলেন দলের পরাজয়—ভারতের ঐতিহাসিক ৬ রানের জয়।
ওভালের শেষ টেস্টে সিরাজ ছিলেন যেন অপ্রতিরোধ্য। দুই ইনিংস মিলিয়ে তুলে নিয়েছেন ৯টি উইকেট—প্রথম ইনিংসে ৪টি, দ্বিতীয় ইনিংসে ৫টি। সমানভাবে উজ্জ্বল ছিলেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণও, যিনি ম্যাচে মোট ৮টি উইকেট নিয়েছেন। শেষ দিনে কার্যত একার হাতে ইংল্যান্ডকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন সিরাজ। দিনের শুরুতেই ফিরিয়ে দেন জেমি স্মিথকে, যার ফলে ইংল্যান্ডের সপ্তম উইকেট পড়ে ৩৪৭ রানে। এরপর সিরাজ ফেরান জেমি ওভারটনকেও। অন্যদিকে, জশ টংকে ফিরিয়ে দেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। শেষ উইকেটে ক্রিস ওকসকে সঙ্গে নিয়ে মরিয়া লড়াই চালাচ্ছিলেন গাস অ্যাটকিনসন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনিও সিরাজের শিকার হন, এবং তাতেই ছয় রানের ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত করে দেয় টিম ইন্ডিয়া।
এই সিরিজ ড্র হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পেতেই পারেন ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর। কোচ হিসেবে চারটি টেস্ট সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে হারিয়ে ভাল সূচনা করলেও, এরপর একের পর এক ধাক্কা। গত বছর নিউ জ়িল্যান্ডের কাছে ঘরের মাঠেই তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় ভারত। তার পরে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ১-৩ ব্যবধানে সিরিজ হারে গিল-বাহিনী। সেই সঙ্গে হাতছাড়া হয় টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার সুযোগও।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন পর্বের শুরুটাও অন্ধকারময় হতে পারত। ইংল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ হার হলে গম্ভীরের কোচিং কেরিয়ারে আরও বড় ধাক্কা লাগত—সমালোচনায় প্রাচীর ভাঙা হয়তো সময়ের অপেক্ষা ছিল। তবে ওভালের রোমাঞ্চকর জয়ে শুভমনদের লড়াই যেন সেই সম্ভাব্য বিপর্যয় থেকে রক্ষা করল তাঁকে। শেষ ম্যাচে দলের জেদ, হার না মানা মানসিকতা দেখে হয়তো অবশেষে গম্ভীরের মুখেও এক চিলতে হাসি ফুটবে।