ডিজিটাল ডেস্ক, ২৯ এপ্রিল: সূত্রের খবর অনুযায়ী, পহেলগাঁওয়ের পর কাশ্মীরের আরও বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় পর্যটনস্থলে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে এমন সতর্কবার্তা পাওয়ার পরই কাশ্মীর সরকার পর্যটনকেন্দ্রগুলি সাময়িকভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উল্লেখযোগ্য, মাত্র এক সপ্তাহ আগেই, গত মঙ্গলবার, পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত হয়েছিল উপত্যকা। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের সন্ত্রাসের ছায়া নেমে এল কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পে। নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যটকদের অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশও জারি হয়েছে।
পুলওয়ামার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে গত মঙ্গলবার। বিকেলবেলা পহেলগাঁওয়ের একটি রিসর্টে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, হামলা করা হয়েছিল বিশেষভাবে ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, হামলাকারীরা সেনার পোশাক পরে এসেছিল। মোট ৪০ রাউন্ড গুলি চালানো হয়, এবং আক্রমণের লক্ষ্য ছিল মূলত অমুসলিম পর্যটকরা। প্রথমে হামলার দায় স্বীকার করলেও পরে তা অস্বীকার করে লস্কর-এ-তৈবা-নির্ভর ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’।
তবে পহেলগাঁও হামলাতেই থেমে নেই জঙ্গিদের ষড়যন্ত্র। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, কাশ্মীরজুড়ে আরও বড়সড় হামলার ছক কষছে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি। ফোনে আড়ি পেতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পরই সক্রিয় হয়ে উঠেছে কাশ্মীরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা স্লিপার সেলগুলি। তাদের ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক অপারেশনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দারা আরও জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক কালে একের পর এক জঙ্গির ঘাঁটি ও বাসভবন ধ্বংস হওয়ায় তার প্রতিশোধ নিতে আরও ভয়াবহ হামলার ছক আঁকছে সন্ত্রাসবাদীরা। এবারও তাদের প্রধান নিশানায় রয়েছে বাছাই করা পর্যটকরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বড় মাপের হামলা চালিয়ে কাশ্মীরের শান্তি ও দেশের নিরাপত্তার উপর বড় ধাক্কা আনতে চাইছে তারা।
এহেন পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই অ্যান্টি ফিদায়েঁ স্কোয়াড নামিয়েছে কাশ্মীর পুলিশ। সেইসঙ্গে কাশ্মীরের ৮৭টি পর্যটনকেন্দ্রের মধ্যে ৪৮টিই বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাশ্মীর সরকার। গুলমার্গ, সোনমার্গ, ডাল লেকের মতো জনপ্রিয় জায়গাগুলিতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা।
বন্ধ হওয়া পর্যটনকেন্দ্রগুলির মধ্যে রয়েছে:
ইউসমার্গ, তৌসি ময়দান, দুধপাথরি, আহরওয়াল, কৌসরনাগ, বাঙ্গাস, কারিওয়ান ডাইভার চান্দিগ্রাম, বাঙ্গাস ভ্যালি, উলার, রামপোরা, রাজপোরা, চিয়ারহড়, মুন্দিজ হাম্মাম মার্কুট জলপ্রপাত, খাম্পু, ভিজিটপ, সান টেম্পল, ভেরিনাগ গার্ডেন, জামিয়া মসজিদ।
এর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি রিসর্ট এবং হোটেল বন্ধ করেছে কাশ্মীর সরকার।
Comments are closed.