ডিজিটাল ডেস্ক, ৩ মে: সরাসরি হোক বা পরোক্ষ পথে, পাকিস্তানে তৈরি কোনও পণ্য আর ভারতীয় বাজারে ঢুকতে পারবে না। পহেলগাঁও হামলার পর উদ্ভূত নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে, পাকিস্তান থেকে সমস্ত ধরনের আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত। বাণিজ্য মন্ত্রক একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, পাকিস্তানে উৎপাদিত কোনও পণ্য আর সরাসরি কিংবা তৃতীয় দেশের মাধ্যমে আমদানি করা যাবে না। বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে—জাতীয় নিরাপত্তা এবং সরকারি নীতির স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। তবে কোনও ব্যতিক্রমের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি অবশ্যই নিতে হবে।
পাকিস্তান থেকে সরাসরি পণ্যের আমদানি ভারতে খুব একটা বেশি হয় না। তবে দুবাই-সহ তৃতীয় দেশ হয়ে কিছু সামগ্রী—যেমন পোশাক, মশলা কিংবা ছোট যন্ত্রাংশ—ভারতীয় বাজারে ঢুকত। বাণিজ্য মহলের একাংশের মতে, এই ঘুরপথে আসা পণ্য আটকাতেই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। যাতে কোনওভাবেই পাকিস্তানি পণ্য ভারতের বাজারে প্রবেশ না করতে পারে, তা নিশ্চিত করতেই এই আমদানি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আসলে, ২০১৯ সালের পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান বাণিজ্যিক সম্পর্কে স্পষ্ট অবনতির সূচনা হয়। ওই সময় নয়াদিল্লি পাকিস্তান থেকে আমদানি হওয়া ফল, সিমেন্ট, পেট্রোপণ্য, আকরিক-সহ একাধিক পণ্যের উপর শুল্ক বাড়িয়ে দেয় প্রায় ২০০ শতাংশ পর্যন্ত। পাশাপাশি, ‘মোস্ট ফেভার্ড নেশন’ বা বিশেষ বাণিজ্যসঙ্গীর তালিকা থেকেও পাকিস্তানকে বাদ দেয় ভারত। তার পর থেকে ধাপে ধাপে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক যোগাযোগ আরও দুর্বল হয়ে পড়ে, এবং আজ তা প্রায় সম্পূর্ণভাবে স্তব্ধ হওয়ার পথে।
প্রসঙ্গত গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর পরপরই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটি জরুরি বৈঠকে বসে। সেই বৈঠকের পর মোদী সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপের ঘোষণা করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পরদিনই ইসলামাবাদও ভারতের বিরুদ্ধে কিছু কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়। পাকিস্তান জানিয়ে দেয়, তারা ভারতের সঙ্গে সমস্ত রকম বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত রাখছে। এমনকি, তৃতীয় কোনও দেশের মাধ্যমে হলেও ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চালাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় ইসলামাবাদ।
Comments are closed.