ডিজিটাল ডেস্ক, ৫ মে: জম্মু ও কাশ্মীরের সব জেলখানায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কড়া করা হয়েছে। সিআইএসএফ-এর ডিজি সম্প্রতি শীর্ষ প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। তার পরেই জেলগুলিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয় (Kashmir Updates)।
সূত্রের খবর, জেলগুলিতে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে বলে গোয়েন্দা তথ্য উঠে এসেছে। সেই সম্ভাবনা মাথায় রেখেই প্রশাসন বাড়তি সতর্কতা এবং প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সূত্রের খবর, জেলে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা প্রকাশ্যে আসতেই তৎপর হয় প্রশাসন। এই সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে রবিবার শ্রীনগরে সিআইএসএফ-এর ডিজি জেল নিরাপত্তা বিষয়ক আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। বৈঠকের পর শ্রীনগরের সেন্ট্রাল জেল ও জম্মুর কোট বালওয়াল জেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হয় এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেখানে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের।
প্রসঙ্গত, এর আগে জম্মু ও কাশ্মীরের জেলগুলির নিরাপত্তার দায়িত্ব ছিল আইআরপিএফ-এর হাতে। কিন্তু ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে সেই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় সিআইএসএফ-এর হাতে। এখন জঙ্গি হামলার আশঙ্কা ঘিরে ওই জেলগুলিতে নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে নেমেছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। সূত্রের খবর, এই মামলায় দুই ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কার—নিসার ও মুস্তাক—কে জেরা করেছে এনআইএ-র তদন্তকারী দল। বর্তমানে এই দুই অভিযুক্ত জেলে বন্দি এবং তারা পহেলগাঁও হামলায় জঙ্গিদের সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছে বলেই সন্দেহ তদন্তকারীদের।
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, নিসার ও মুস্তাক আগে থেকেই হামলার পরিকল্পনার কথা জানত এবং জঙ্গিদের লজিস্টিক ও স্থানীয় সহায়তা দিয়েছিল। এনআইএ মনে করছে, এই দুই জনকে জেরা করেই হামলার পেছনে থাকা পুরো জঙ্গি নেটওয়ার্কের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।
এছাড়াও জানা গেছে, ২০২৩ সালে রাজৌরিতে যে জঙ্গি হামলায় দুই শিশুসহ ৭ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন, সেই ঘটনাতেও সরাসরি যুক্ত ছিল নিসার ও মুস্তাক।
প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, পহেলগাঁও হামলায় যুক্ত একাধিক সন্দেহভাজন জঙ্গি বর্তমানে জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন জেলে বন্দি রয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের আশঙ্কা, এই বন্দিদের জেল থেকে ছিনিয়ে নিতে শ্রীনগর ও জম্মুর জেলগুলিতে বড়সড় হামলার পরিকল্পনা করছে জঙ্গিরা।
এই সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে প্রশাসন আগেভাগেই সতর্ক হয়ে জেলগুলিতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে, মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত বাহিনী।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পরও এখনও পর্যন্ত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় চিরুনিতল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ এবং নিরাপত্তাবাহিনী। কয়েকটি সূত্র দাবি করছে, হামলাকারীরা এখনও দক্ষিণ কাশ্মীরে লুকিয়ে রয়েছে, আবার কিছু সূত্রের মতে, তারা কাশ্মীর ছেড়ে অন্য কোথাও চলে গেছে। সীমান্ত পেরিয়ে চলে যাওয়ার সম্ভাবনাও পুরোপুরি অস্বীকার করা যাচ্ছে না।
Comments are closed.