ডিজিটাল ডেস্ক, ১১ মে : আগামী তিন মাস রাজ্যের কোনো জেলায় যাতে খাদ্যসঙ্কট না দেখা দেয়, ভারত-পাক সংঘাতের আবহে আগাম ব্যবস্থা নিতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন (India Pakistan Tensions Nabanna)। জুন, জুলাই ও আগস্টের জন্য চাল, গম-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য আগেভাগেই মজুত করতে বলা হয়েছে। রবিবার মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এই বিষয়ে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও প্রশাসনের একাধিক শীর্ষকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বিপর্যয় মোকাবিলা এবং স্বাস্থ্য বিভাগ-সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের শীর্ষকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্য যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকে তা নিশ্চিত করতে মুখ্যসচিব পর্যালোচনা বৈঠক করেন। বৈঠকে আলোচনা হয় সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বৃদ্ধি, হাসপাতালের প্রস্তুতি, বিপর্যয় মোকাবিলায় বিশেষ প্রশিক্ষণ ও মহড়া সংক্রান্ত বিষয়ে। কোনও জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে জনসাধারণ যেন কোনও অসুবিধার সম্মুখীন না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক ও পুলিশ কর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিনের বৈঠকে জেলাশাসকদের খাদ্য মজুতের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি জানানো হয়েছে যে, আগামী তিন মাসের রেশনের বরাদ্দ তিনটি পর্যায়ে জেলাগুলিতে পাঠানো হবে। প্রতিটি জেলায় বর্তমানে কত পরিমাণ খাদ্য মজুত রয়েছে, তা জেলাভিত্তিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যদিও জেলাগুলিতে পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে, তবু রাজ্য সরকার কোনও ফাঁক রাখতে রাজি নয়। এই কারণে আগাম পরিকল্পনা সম্পন্ন করা হয়েছে, বলে প্রশাসনের মত।
বৈঠকে রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে কড়া নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয় পুলিশকর্তাদের। সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশের প্রতি। প্রত্যন্ত, পাহাড়ি ও বনাঞ্চল ঘেরা দুর্গম এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করতে হবে। সুন্দরবনের জলপথ ও উত্তরবঙ্গের আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় বিশেষ নজরদারি বজায় রাখতে হবে। হাসপাতালগুলোর গুরুত্বও বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের শীর্ষকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে চিকিৎসা পরিষেবায় কোনো ঘাটতি না থাকে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আগে থেকেই নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও, দমকল বিভাগের কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধারকাজ ও অন্যান্য ব্যবস্থার প্রস্তুতি হিসেবে মহড়া সম্পন্ন করতে হবে। বিশেষ করে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কোনও প্রশিক্ষণ যেন বাকি না থাকে, তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ারদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও রিফ্রেশার কোর্স চালু করার সিদ্ধান্তও বৈঠকে গৃহীত হয়েছে। বর্তমানে দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর আগের তুলনায় অনেক বেশি সক্ষম। এই ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।এছাড়া, সাইরেনগুলিকে সম্পূর্ণরূপে চালু করার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
Comments are closed.