ডিজিটাল ডেস্ক ২৭জুনঃ আম-জাম-কাঁঠাল, আপেল, আঙুর, অন্ন, পরমান্ন, লুচি, হরেক রকম ভাজা, জিলিপি, রসগোল্লা, পান্তুয়া, সরপুরিয়া, রসালো ফল, সুস্বাদু খাদ্য তালিকাটি কোনও অনুষ্ঠানের নয়। রথযাত্রার সময়ে এই খাবারগুলো সুন্দর ও সুসজ্জিত ভাবে নিবেদন করা হয় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে। কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার কি জানেন , পূর্ব উল্লেখিত খাবারের পাশাপাশি দেবদেবীদের জন্য চাউমিন, পাস্তা, বার্গার, ক্রিমরোল, ডোনাটও নিবেদন করা হয় । সব আইটেমই মন্দিরের নিজস্ব রন্ধনশালায় নিরামিষ উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয় । রথ উপলক্ষে তাঁদের জন্য এই বিশেষ আপ্যায়ন হয়ে থাকে মাসির বাড়িতে। ৫৬ ভোগ নিবেদন করা হয় তাঁদের। সোজা রথ আর উল্টোরথের মাঝের সাতদিন মাসির বাড়িতে ভালোবাসায় মুড়ে ফেলা হয় তিন হিন্দু দেবদেবীকে। সোজা থেকে উল্টো রথের মাঝের কয়েক দিনে মাসির বাড়িতে দেবদেবীকে বিভিন্ন ফলাহার, চাউমিন, পাস্তা, বার্গার, ক্রিমরোল, ডোনাটও উৎসর্গ করা হয়। সারা বছর এই রথের দেবদেবী জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা থাকেন মায়াপুর ইসকন মন্দির থেকে প্রায় পাঁচ কিমি দূরে রাজাপুর গ্রামের জগন্নাথ মন্দিরে (Mayapur Jagganath News)।
এ বার সোজা রথ ২৭ জুন, শুক্রবার। এ বারেও রাজাপুর গ্রামের জগন্নাথ মন্দির লাগোয়া মাঠ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে রথের টান হবে দুপুর দুটোয়। পথে ঝাড়ু দিয়ে যাত্রাপথ পরিষ্কার করে এগোবেন ভক্তরা। সঙ্গে রয়েছে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। প্রায় পাঁচ কিমি রাস্তা পেরিয়ে মায়াপুর ইসকনের মূল মন্দিরে শেষ হবে যাত্রা। এখানে উল্টোরথ আগামী ৫ জুলাই, শনিবার। ওই দিন একই পথ অনুসরণ করে একই আয়োজন করে রাজাপুরের মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হবে তিন দেবদেবীকে। দেবদেবীদের জন্য তিনটে আলাদা রথ থাকে নদিয়ার মায়াপুরের ইসকনে। ভক্তদের দর্শন দিতে একই দিনে, একই সময়ে রাজপথে যাত্রা শুরু করেন তাঁরা। মাসির বাড়িতে পৌঁছে অবশ্য একসঙ্গেই থাকেন তাঁরা। রথ দর্শনে আসে দেশ-বিদেশের ভক্ত ও পর্যটকরা । মন্দিরনগরী মায়াপুর, নবদ্বীপ ঘুরে দেখেন বলে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে চৈতন্যধামে বাড়তি ভিড় থাকে এই অঞ্চল ।
ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা অভয়চরণ ভক্তিবেদান্ত স্বামী ১৯৬৭-তে আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকো শহরে রথযাত্রার আয়োজন করেছিলেন। তারপর একে একে বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত ইসকনের সব শাখাতেই শুরু হয় এই রীতি। চৈতন্যধাম মায়াপুর, ইসকনের ওয়ার্ল্ড হেড কোয়ার্টার হওয়ায় এখানে বছরের অন্য উৎসবগুলোর মতো রথযাত্রার জাঁকজমকও বেশ নজরকাড়া। সারা বছর এই রথের জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা থাকেন মায়াপুর ইসকন মন্দির থেকে প্রায় পাঁচ কিমি দূরে রাজাপুর গ্রামের জগন্নাথ মন্দিরে।