Kalyan Mahua Face Off : ফের প্রকাশ্যে দুই সাংসদের দ্বন্দ্ব, নারীবিদ্বেষ নিয়ে বাদানুবাদে কল্যাণ ও মহুয়া

11

ডিজিটাল ডেস্ক, ২৯ জুন : কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহুয়া মৈত্রের মধ্যে ফের তুমুল বিবাদ (Kalyan Mahua Face Off)। এবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে নারীবিদ্বেষ। রবিবার সকালে শ্রীরামপুরের সাংসদের মন্তব্য ঘিরে যেন রাজনীতিতে ঝড় বয়ে গেল।

কসবা কাণ্ড ঘিরেই এবার তুঙ্গে বিতর্ক। প্রথমে মুখ খোলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য, “সহপাঠী যদি সহপাঠিনীকে ধর্ষণ করে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে কে?” এরপর বিতর্কে জড়ান কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রও। তাঁদের বক্তব্য ঘিরে শুরু হয় কটাক্ষের ঝড়। কোনও নাম না করে মহুয়া মৈত্র সোশাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানান। তাঁর কথায়, “ভারতে নারীবিদ্বেষ কোনও দলীয় সীমায় বাঁধা নেই। তবে তৃণমূলের যা আলাদা পরিচয়, তা হল—এমন অপ্রত্যাশিত মন্তব্যের আমরা প্রতিবাদ করি, তা যার কাছ থেকেই আসুক না কেন।”

তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মদন মিত্রের মন্তব্যকে স্পষ্টভাবে সমর্থন করা হয়নি—বরং দলীয় স্তরে প্রকাশ্যে তাদের বক্তব্যের কড়া বিরোধিতা করা হয়। এই অবস্থান থেকেই বোঝা যায়, বিতর্কিত মন্তব্যের প্রসঙ্গে দল নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে আগ্রহী। চাইলে আমি এই প্রতিক্রিয়ার রাজনৈতিক তাৎপর্য নিয়েও আলোকপাত করতে পারি।

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহুয়া মৈত্রের মধ্যকার দ্বন্দ্ব আরও গভীর রূপ নেয়। এবার পাল্টা জবাবে কল্যাণ একটি ব্যক্তিগত সুরে আক্রমণ করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “দেড় মাসের মধুচন্দ্রিমা শেষে ফিরে এসেই কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছেন?” নিজেকে নারীবিদ্বেষী নয় বলেই দাবি করে কল্যাণ বলেন, “আমি বরং নারীদের অধিকারের পক্ষে সবচেয়ে বেশি কথা বলেছি। অথচ মহুয়া এতটাই পক্ষপাতদুষ্ট যে কৃষ্ণনগরের যোগ্য মহিলা নেতৃত্বকে কখনও মাথা তুলতে দেন না।” তিনি মহুয়ার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও আক্রমণ করেন—বিয়ের ভাঙন ও নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার প্রসঙ্গ তুলে প্রশ্ন করেন, “এই ধরনের সিদ্ধান্তে কোনও নারীর মন কতটা আহত হয়, সেটা ভেবেছেন কখনও?” শেষে তিনি বলেন, “আমি নারীদের সর্বদা সম্মান করি। তবে একটি নারীকে আমি অপছন্দ করি—তিনি মহুয়া মৈত্র।”

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর আক্রমণের ধার আরও তীব্র করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কবে রাজনীতিতে এসেছেন তিনি? একসময় নিজেকে রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ বলে কৃষ্ণনগরে রাজনীতি করতেন।” ২০১১ সালের প্রেক্ষাপট টেনে কল্যাণ জানান, এক প্রবীণ সাংসদ তখনই সতর্ক করেছিলেন যে ওই এলাকায় মহুয়াকে মানাবে না। তাঁর পরিবর্তে অন্য এক মহিলার নাম প্রস্তাবিত হয়, যিনি পরবর্তীকালে মন্ত্রী হন। কল্যাণের বক্তব্য, “তৃণমূলের স্বর্ণযুগে সাংসদ হয়েছেন মহুয়া। এখন সেই পদকে পুঁজি করে ফায়দা তুলছেন। আর আমায় নারীবিদ্বেষ শেখাতে আসছেন?” তিনি আরও দাবি করেন, কালীগঞ্জ উপনির্বাচনে মহুয়ার রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই তিনি সেখানে প্রচারে যেতে পারেননি।