Bengal Election 2026 : ছাব্বিশের নির্বাচনের ভীত চব্বিশের তালিকায়! অভিযোগ নিয়ে কমিশনে তৃণমূল

13

ডিজিটাল ডেস্ক ২জুনঃ দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটিতে ধরা পড়েছে সাড়ে ৪ হাজার ভুয়ো ভোটার। তাদের অধিকাংশের ঠিকানা মুর্শিদাবাদ,মালদহ, শিলিগুড়ি। একই মোবাইল নম্বর জুড়ছে একাধিক নতুন ভোটারের নামের সঙ্গে। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকে চিহ্নিত হয়েছে ১৫০ জাল ভোটার। ভোটার তালিকায় ৯২ হাজার ১৮৭ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে অবৈধভাবে। এমন বেশ কিছু অনিয়মের অস্ত্র হাতে নিয়ে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনকে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ থাকারই দাবি জানিয়ে এল তৃণমূল। বলল, কারও চাপে যেন কমিশন মাথা নত না করে। শুধু তাই নয়, আগামী বছর বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনে ২০২৪’এর ভোটার তালিকাকেই ভিত্তি ধরার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল(Bengal Election 2026)।

মঙ্গলবার দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার, দুই কমিশনার সুখবীর সিং সান্ধু এবং বিবেক যোশির মুখোমুখি বসেছিল তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল। ছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশ চিক বরাইক, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস এবং ফিরহাদ হাকিম। দলের পক্ষে তৈরি ১২ পাতার একটি নথি সামনে রেখে একের পর এক ইস্যুতে কমিশনের অবস্থান জানতে চান তাঁরা। দেন প্রস্তাবও। তাতে ভোটার তালিকা থেকে ইভিএম, আচমকা অস্বাভাবিক ভোটার বৃদ্ধি, ভুয়ো ও ডুপ্লিকেট ভোটার, আদর্শ নির্বাচন বিধি লঙ্ঘন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর অপব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে। তৃণমূলের প্রতিনিধিরা সাফ জানিয়েছেন, ভোটার তালিকা শুদ্ধিকরণের নামে যেন কোনও কারচুপি না হয়। বিহারে স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশনের নামে ২০০৩ সালের যে ভোটার তালিকাকে সামনে রাখা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে তা চলবে না। ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে ভিত্তি হোক ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ভোটার তালিকা। তারপর যাঁদের নাম তালিকায় যুক্ত হয়েছে বা হচ্ছে, তাঁদের ক্ষেত্রে কমিশন শর্ত চাপাতেই পারে। কিন্তু সাধারণ মানুষ যেন হেনস্তার মুখে না পড়েন। ২০২৪ সালে যে ভোটার তালিকার ভিত্তিতে নির্বাচন হয়েছে, সেটাই সাম্প্রতিক। তাহলে কেন পুরনো ভোটার তালিকা ভিত্তি হিসেবে ধরা হবে? কমিশনের সামনে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এ কথা জানিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধিরা।

এই প্রসঙ্গেই তাঁরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ভোটের আগেই আচমকা ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে। ১৮ থেকে ২২ বছর বয়সের মধ্যে কিন্তু তাঁরা নন! সিংহভাগই চল্লিশোর্ধ্ব। এই বয়সি ভোটার কয়েক হাজার এক ধাক্কায় বেড়ে যাওয়াটা কি সন্দেহজনক নয়? প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। তাই ভোটের ৪৫ দিন আগে কোনও জায়গায় একঝাঁক নতুন ভোটার যুক্ত হলে তা রাজনৈতিক দলকে জানাতে হবে বলেই দাবি করেছে তৃণমূল। যাতে তারাও খতিয়ে দেখতে পারে।
প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠকে কমিশনের সামনে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন সতীর্থদের পাশে নিয়ে তোপ দেগেছেন, একইভাবে ফিরহাদ হাকিম এবং অরূপ বিশ্বাস প্রস্তাব দিয়েছেন বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি রাজ্য পুলিস রাখার জন্য। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী, অমিত শাহ, রাজ্যপাল এবং বাংলার বিরোধী দলনেতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘের অভিযোগ করেছে তৃণমূল। ২০২৪ সালের ২১ এপ্রিল রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ায় নরেন্দ্র মোদির বক্তৃতার প্রসঙ্গও তুলে ধরা হয়েছে। কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর কল্যাণবাবু বলেন,‘হাড়োয়া এবং নৈহাটি বিধানসভার উপ নির্বাচনে আদর্শ আচরণবিধি জারি সত্ত্বেও ২০২৪ সালের ২৭ অক্টোবর পেট্রাপোলে সরকারি কর্মসূচিতে গিয়ে অমিত শাহ রাজনৈতিক বক্তৃতা দিয়েছেন। আমরা কমিশনের কাছে এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছি। ভোটপর্বে রাজ্যপালের ভূমিকাও বেঁধে দিয়ে কোড অব কনডাক্টের দাবি তুলেছি। কমিশন আমাদের দাবির কোনওটাই ফেলতে পারেনি। বলেছে, ভেবে দেখছি।’