GST On FMCG Goods : মধ্যবিত্তের জন্য আসতে চলেছে সুখবর! অত্যাবশ্যকীয় পণ্যে জিএসটি ছাড়ের কথা ভাবছে কেন্দ্র
ডিজিটাল ডেস্ক, ২ জুলাই : দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ধাক্কায় বিপর্যস্ত মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের জন্য এবার স্বস্তির খবর আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (GST) কাঠামোয় আসতে পারে বড়সড় পরিবর্তন। সূত্রের খবর, জিএসটির বিভিন্ন স্ল্যাব পুনর্গঠনের পরিকল্পনা চলছে, যাতে দেশের বৃহত্তর জনসংখ্যা কিছুটা স্বস্তি পায়। প্রস্তাবিত পরিবর্তনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল—কয়েকটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্যে ১২ শতাংশ জিএসটি কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হতে পারে। এমনকি সরকার ১২ শতাংশ স্ল্যাবটি পুরোপুরি তুলে দেওয়ার কথাও ভাবছে বলে জানা যাচ্ছে (GST On FMCG Goods)।
সূত্রের মতে, দেশের সাধারণ মানুষ যেসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য প্রতিদিন ব্যবহার করেন, সেগুলির উপর বর্তমানে ১২ শতাংশ হারে জিএসটি দিতে হয়। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারগুলোর জন্য এই করের বোঝা যথেষ্ট চাপের। সেই কারণেই সরকার ভাবছে, এই ধরনের অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের উপর জিএসটি ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হোক। লক্ষ্য একটাই—জরুরি পণ্য যেন আরও সস্তায় সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে আসে।
বিকল্প পরিকল্পনায় রয়েছে, ১২ শতাংশ জিএসটির স্তরটি সম্পূর্ণভাবে তুলে দেওয়া। সেই ক্ষেত্রে, এই স্ল্যাবে থাকা পণ্যগুলিকে হয় নিচের স্তরে (যেমন ৫ শতাংশ) নামিয়ে আনা হবে, অথবা কিছু পণ্যকে তুলে নিয়ে যাওয়া হতে পারে উচ্চতর স্তরে (যেমন ১৮ শতাংশ)। ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জিএসটি কাউন্সিলের আসন্ন ৫৬তম বৈঠকে। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, বৈঠকের অন্তত ১৫ দিন আগে সদস্যদের নোটিস দিতে হয়। সূত্রের খবর, চলতি মাসের শেষ দিকে এই বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের উপর জিএসটি হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবনার পিছনে রাজনৈতিক হিসাবও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ, চলতি বছরের উৎসব মরশুম মিটতেই শুরু হবে নির্বাচনের মরশুম। একের পর এক রাজ্যে বিধানসভা ভোটের মুখোমুখি হবে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। এমন পরিস্থিতিতে, নীচুতলার মানুষের উপর চাপ কমিয়ে জিএসটি হ্রাসের মাধ্যমে আর্থিক স্বস্তি দিতে পারলে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে ভোটবাক্সে। ফলে এই পদক্ষেপ শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক দিক থেকেও অত্যন্ত কৌশলগত বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
উল্লেখযোগ্যভাবে, জিএসটি কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে সদস্য হিসেবে থাকেন সমস্ত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরাও। এই কাউন্সিলই দেশের জিএসটি হারের পরিবর্তন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। সেই বিবেচনায় কেন্দ্র সরকার এক প্রকার কৌশলগতভাবে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকে রাজনৈতিক চাপের মুখে ফেলতে পারে—কারণ গরিব মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে জিএসটি কমানোর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা কার্যত অসম্ভব। অন্যদিকে, যদি সব পক্ষ একমত হয়, তাহলে সেই সমর্থনের সুফল সরাসরি যাবে বিজেপির ঘরে, বিশেষ করে নির্বাচনের মুখে জনমত গঠনের দিক থেকে।