ডিজিটাল ডেস্ক, ২ জুলাই : ২০২০ সাল থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে (Covid Vaccine Heart Dieses)। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট সব কথাই আলোচনায় রয়েছে—তেমনই উদাহরণ সেদিকে তাকায় শেফালী জারিওয়ালার অকাল প্রয়াণ ও কর্নাটকের হাসানে একটির পর এক তরুণ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ। এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে উঠছে সন্দেহ—কোভিড‑১৯ ভ্যাক্সিনের সঙ্গে এ ভয়াবহ প্রবণতার কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি? কেউ হ্যাঁ বলছেন, কেউ না বলছেন।
কিন্তু এবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—কোভিড‑১৯ টিকা নেওয়ার সঙ্গে হৃদরোগে আকস্মিক মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির কোনো প্রমাণ নেই। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) ও অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (AIIMS) যৌথভাবে গবেষণা করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যারা কোভিড‑১৯ এর টিকা নিয়েছেন, তাদের জন্য হৃদরোগ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।
ভারতের ICMR ও AIIMS‑এর প্রাপ্তবয়স্কদের নিয়ে গবেষণায় পাওয়া গেছে, হৃদরোগে আকস্মিক মৃত্যুর সঙ্গে COVID‑19 টিকার কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। ICMR এবং NCDC‑র বিশ্লেষণে নিশ্চিত হয়েছে, ভারতের COVID‑19 ভ্যাকসিন নিরাপদ ও কার্যকর। গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনা অত্যন্ত বিরল, এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
হৃদরোগে আকস্মিক মৃত্যু ঘটলে, এর পেছনে জিনগত কারণ, জীবনধারা অথবা পূর্বে থাকা স্বাস্থ্য জটিলতা যেমন—উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস ইত্যাদি দায়ী হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, COVID‑19 যন্ত্রণার পরবর্তী জটিলতা থেকেও এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তাই যেসব রিপোর্ট বা বক্তব্য COVID‑19 টিকাকে হৃদরোগ বৃদ্ধির জন্য দায়ী করছে, সেগুলো ICMR‑এনসিডিসি‑এর বিশ্লেষণের আলোকে সঠিক নয়।
সম্প্রতি শেফালি জারিওয়ালার মৃত্যু নিয়ে নতুন একটি প্রতিবেদন এসেছে, যেখানে পুলিশের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী তাঁর আকস্মিক মৃত্যুর কারণ ছিল রক্তচাপ পুরোপুরি কমে যাওয়া (hypotension)। কিছু চিকিৎসক জানিয়েছেন, তিনি হয়তো উপবাসের সময় নানা ওষুধ ও একটি অ্যান্টি‑এজিং ইনজেকশন নিয়েছিলেন, যার ফলে ওই রাতে রক্তচাপ হঠাৎ করে ব্যাপকভাবে নিম্নমুখী হয়ে যায়।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে কম বয়স থেকেই কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা খুব জরুরি। নিচের বিষয়গুলো মেনে চললে হৃদয় থাকবে অনেকটাই সুরক্ষিত:
রক্তচাপ নিয়মিত মাপুন — যদি স্বাভাবিক না থাকে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ব্লাড সুগারে নজর রাখুন — ডায়াবেটিস নিঃশব্দে শরীরের ক্ষতি করতে পারে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন — বাড়তি ওজন অনেক অসুখ ডেকে আনে।
কোলেস্টেরল নজরে রাখুন — মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
মানসিক চাপ কমান — চাপ শরীর ও মনের জন্য ক্ষতিকর, নিজেকে সময় দিন।