Central Health Ministry Corruption:ঘুষের স্তুপ,ভুয়ো রোগী ! সিবিআই এর শ্যেনদৃষ্টিতে ধর্মগুরু সহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় অফিসারও
ডিজিটাল ডেস্ক ৫ই জুলাইঃ ডাক্তারি পড়ানোর মতো প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই কলেজে। শিক্ষকও নেই। বেআইনি ভাবে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)-এর ছাড়পত্র পেতে কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েছে বলে অভিযোগ। তদন্তে নেমে সেই ‘মেডিক্যাল কলেজ দুর্নীতির হদিস পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই চক্রে যুক্ত রয়েছেন স্বঘোষিত গুরু থেকে সরকারি শীর্ষকর্তারা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আমলারাও জড়িত বলে জানতে পেরেছে সিবিআই। যে মেডিক্যাল কলেজ সিবিআইয়ের নজরে,তারই চেয়ারম্যান হলেন স্বঘোষিত গুরু রবিশঙ্কর মহারাজা ওরফে রাওয়াতপুরা। বিভিন্ন রাজনীতিবিদ,মন্ত্রী,প্রভাবশালী ব্যক্তি, পুলিশকর্তা, আমলাদের সঙ্গে তাঁর ছবি অতীতে বার বার প্রকাশিত হয়েছে। অভিযোগ, তাঁর ট্রাস্ট সরকারি প্রকল্পের বরাতের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পায়। সরকারের থেকে ভর্তুকি পায়। অতীতে রাওয়াতপুরার ট্রাস্টের বিরুদ্ধে জমি অধিগ্রহণের অভিযোগও উঠেছে(Central Health Ministry Corruption)।
রায়পুরের কলেজের ঘটনার পরে তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পারে,মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের কলেজেও একই ঘটনা হয়েছে। ইনদওরের ইনডেক্স মেডিক্যাল কলেজের চেয়ারম্যান সুরেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, চিকিৎসকদের উপস্থিতি দেখাতে ক্লোন করা কৃত্রিম আঙুল ব্যবহার করে বায়োমেট্রিক যন্ত্রে ছাপ দিতেন। উদয়পুরের গীতাঞ্জলি মেডিক্যাল কলেজও নজরে তদন্তকারীদের। তাঁরা আরও জানতে পেরেছেন, অন্ধ্রপ্রদেশের কাদিরির এজেন্ট বি হরিপ্রসাদ এবং তাঁর সঙ্গী অঙ্কম রামবাবু এই সব মেডিক্যাল কলেজে এনএমসির পরিদর্শনের আগে ভুয়ো কর্মী, রোগী জোগান দিতেন। এই রামবাবু হায়দরাবাদের বাসিন্দা। এই কাজে সাহায্য করতেন বিশাখাপত্তনমের কৃষ্ণ কিশোর। ওয়ারাঙ্গলের একটি মেডিক্যাল কলেজকে অনুমোদন পাইয়ে দিতে চার কোটি টাকা তিনি নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
সিবিআইয়ের এফআইআরে ৩৬ জনের নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে আট জন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিক। পাঁচ জন চিকিৎসকও রয়েছেন,যাঁরা এনএমসির পরিদর্শক দলের সদস্য। এমনটাই জানিয়েছে পিটিআই। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন আট জন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বলছে, এটি দেশের ‘বৃহত্তম মেডিক্যাল কলেজ দুর্নীতি’। ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশের গুরুগ্রাম থেকে দক্ষিণের রাজ্যেও ছড়িয়ে রয়েছে শিকড়। সিবিআইয়ের একটি সূত্র বলছে, সারা দেশে ৪০টি মেডিক্যাল কলেজ এনএমসি-এর আধিকারিকদের ঘুষ দিয়ে, ভুয়ো তথ্য দাখিল করে স্বীকৃতি, ছাড়পত্র আদায় করেছে। সূত্রের খবর,তাদের উদ্দেশ্য ছিল পড়ুয়া ভর্তি করিয়ে টাকা হাতানো।
সিবিআই নজরে-
ডিপি সিংহ, ইউজিসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেসের বর্তমান আচার্য।
রবিশঙ্কর মহারাজা ওরফে রাওয়াতপুরা সরকার, স্বঘোষিত গুরু এবং শ্রী রাওয়াতপুরা ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চের চেয়ারম্যান।
সুরেশ সিংহ ভাদোরিয়া, ইনদওরের ইনডেক্স মেডিক্যাল কলেজের চেয়ারম্যান।
ময়ূর রাভাল, গীতাঞ্জলি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার।
এই চার জনেরই নাম রয়েছে সিবিআইয়ের এফআইআরে। তাঁদের বিরুদ্ধে ঘুষ দেওয়া-নেওয়া এবং পরিদর্শনে আসা সরকারি আধিকারিকদের ভুল পথে চালিত করার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি আরও অভিযোগ, এই কাণ্ডে টাকার বিনিময়ে সরকারি ফাইলও তুলে দেওয়া হত ছাড়পত্র প্রত্যাশী মেডিক্যাল কলেজগুলির হাতে।
রায়পুরের শ্রী রাওয়াতপুরা ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চের বিরুদ্ধে পরিদর্শকদের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তিন চিকিৎসক-সহ ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, পরিদর্শন নিয়ে ইতিবাচক রিপোর্ট দেওয়ার জন্য ৫৫ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন তাঁরা। ওই চিকিৎসকদের হাতেনাতে ধরেছিল সিবিআই। পরিদর্শক দলের প্রধানের সহযোগীর থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল ৩৮.৩৮ লক্ষ টাকা। আর এক সরকারি কর্তার সরকারি আবাসন থেকে উদ্ধার হয় ১৬.৬২ লক্ষ টাকা। সিবিআই জানিয়েছে, হাওয়ালার মাধ্যমে ঘুষের টাকা নেওয়া হত। তার পরে তা ভাগ-বাঁটোয়ারা করা হত অভিযুক্তদের মধ্যে। রায়পুরের এই ঘটনার তদন্তে নেমেই সিবিআই দেখে, শিকড় গজিয়েছে অন্য রাজ্যেও।