Trump-Modi In Brics:ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি,অভিযোগের তীর ব্রিকসের দিকে,শঙ্কায় ভারতের বানিজ্যমহল

13

ডিজিটাল ডেস্ক ১০ই জুলাইঃ আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের কোনও প্রতিপক্ষ চাইছেন না আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প!মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিকস সদস্যদের উপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দ্বিগুণ করেছেন এবং অভিযোগ করেছেন যে এই ব্রিকস গোষ্ঠী “আমাদের ডলারের অবক্ষয় ঘটানোর জন্য প্রতিষ্ঠিত”। মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করার সময় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন:”ব্রিকসে থাকা সদস্যদের জন্য ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করছেন তিনি ” এবং এর মধ্যে ভারতও থাকবে বলে জানিয়েছেন (Trump-Modi In Brics) ।
যা ভারতকে প্রভাবিত করতে পারে এমন আরেকটি বাণিজ্য ইস্যুতে ট্রাম্প বলেন যে, ওষুধের উপর ২০০ শতাংশ শুল্ক শীঘ্রই আসবে,তবে এর সঙ্গে তিনি আরও বলেন যে, তিনি “মানুষকে প্রায় এক,দেড় বছর সময় দেবেন”। “আমরা তাদের কাজ একত্রিত করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় দেব,”।গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের ওষুধ রপ্তানি ছিল প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার।

একজন প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে আমেরিকার সাথে ভারতের শীঘ্রই বাণিজ্য চুক্তি হতে চলেছে । বস্তুত, ট্রাম্প যখন ‘ব্রিক্‌স’-এর উদ্দেশে হুমকি দেন,তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্রাজ়িলেই ছিলেন। গত মঙ্গলবার ভারতীয় আগের বিদেশ দফতরের সচিব পি কুমার জানান, ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে ব্রাজ়িলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি মোদীর। ঘটনাচক্রে, আগামী বছর ‘ব্রিক্‌স’-এর সভাপতিত্বের দায়িত্ব পাওয়ার কথা রয়েছে ভারতের। ‘ব্লুমবার্গ’-এর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এই আন্তর্জাতিক জোটের অন্যতম দুই সদস্যরাষ্ট্র চিন এবং রাশিয়া চাইছে ‘ব্রিক্‌স’-কে আমেরিকার বিপরীতে একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক মঞ্চের রূপ দিতে।

তবে ভারতের সভাপতিত্ব থাকাকালীন এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছে ওয়াশিংটন। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই ভারতকে কৌশলগত এক বন্ধুরাষ্ট্র হিসাবে বিবেচনা করে আমেরিকা। এশিয়ায় চিনের প্রভাবকে ঠেকাতে ভারতকে প্রয়োজন আমেরিকার। সে ক্ষেত্রে অনুমান করা হচ্ছে, অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে ‘ব্রিক্‌স’কে চাপে রাখতে চাইছেন ট্রাম্প।

গত রবিবার ব্রাজ়িলের রিও ডি জেনেইরো শহরে ‘ব্রিক্‌স’ সম্মেলন আয়োজিত হয়। সেখানে আন্তর্জাতিক জোটটির যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হওয়ার পরেই সরাসরি ‘ব্রিক্‌স’কে নিশানা করেন ট্রাম্প। ‘ব্রিক্‌স’-এর যে সদস্যরাষ্ট্রগুলি ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের বিরোধিতা করেছিল, তাদের মধ্যে ব্রাজ়িল এবং দক্ষিণ আফ্রিকাও রয়েছে। ঘটনাচক্রে দুই দেশেই শুল্ক-চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রে এপ্রিলে যে শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন, তা-ই অপরিবর্তিত রয়েছে। আবার ব্রাজ়িলের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন পদক্ষেপ। এপ্রিলে ব্রাজ়িলের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। বুধবার ব্রাজ়িলকে চিঠি পাঠিয়ে ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপাচ্ছেন তিনি। এক ধাক্কায় ১০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। জুলাই মাসে ট্রাম্প-ঘোষিত শুল্কগুলির মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ।

তবে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে ভারত প্রকাশ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। অনুমান করা হচ্ছে, ভারত যে আমেরিকার সঙ্গে একটি মসৃণ বাণিজ্যিক সম্পর্ক চায়, তা বোঝানোর জন্যই এই পদক্ষেপ। যদিও ব্রাজ়িলের উপর অতিরিক্ত শুল্কের নেপথ্যে শুধুমাত্র বাণিজ্যিক কারণ রয়েছে কি না, তা-ও স্পষ্ট নয়। কারণ চিঠিতে ব্রাজ়িলের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে বিচারপ্রক্রিয়া চালানোর অভিযোগও তুলেছেন তিনি।