Odisha Migrant Labour Issue : ওড়িশায় বন্দিদশা কাটিয়ে বাড়ি ফিরেও আতঙ্কে বাংলার ৩৬ জন

12

ডিজিটাল ডেস্ক, ১১ জুলাই : শুধু বাংলা ভাষায় কথা বলার ‘অপরাধে’ ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হল পশ্চিমবঙ্গের ৩৬ জন পরিযায়ী শ্রমিককে (Odisha Migrant Labour Issue)। ওড়িশার বিভিন্ন জেলার অস্থায়ী বন্দিশিবিরে তাঁদের দিনের পর দিন আটকে রাখা হয়। কেউ তিন দিন, কেউ বা টানা তিন সপ্তাহ বন্দিদশায় কাটিয়েছেন। অধিকাংশ শ্রমিক নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা। রাজ্যে ফিরে এলেও এখনও আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেননি তাঁরা।

এই শ্রমিকদের অভিযোগ, ওড়িশার ঝাড়সুগুদা, জগৎসিংহপুর, জাজপুর, কোরাপুট, ভদ্রক-সহ একাধিক জেলায় তৈরি হয়েছে অস্থায়ী শিবির। মোট ১৫টি থানার মধ্যে ১২টিতে চলছে ‘চিহ্নিতকরণ অভিযান’। পুলিশের তিনটি ভ্যান একদিন হঠাৎই বিভিন্ন নির্মাণস্থলে হানা দিয়ে শুধু বাংলায় কথা বলার জন্যই তাঁদের ধরে নিয়ে যায়। সন্দেহ করা হয়, তাঁরা বাংলাদেশি নাগরিক। অথচ অধিকাংশের কাছেই আধার কার্ড, ভোটার আইডি, রেশন কার্ড, এমনকি পাসপোর্টও ছিল। তবুও নথিপত্র দেখিয়েও রক্ষা পাননি তাঁরা।

প্রায় দশ দিন বন্দি থাকার পর মুক্তি পাওয়া নদিয়ার পরিযায়ী শ্রমিক নুরসেলিম শেখ, আনোয়ার হোসেনদের অভিজ্ঞতা রীতিমতো ভয়াবহ। তাঁরা জানান, সকালে খাবার হিসেবে দেওয়া হত চিঁড়ে আর গুড়, যার বেশির ভাগটাই পোকায় ভর্তি। দুপুর ও রাতে মিলত ডাল-ভাত ও আলু সেদ্ধ, তবে সেই খাবারও অনেক সময় সবাইকে দেওয়া হত না। অস্থায়ী বন্দিশিবিরে মেঝেয় কাপড় বিছিয়ে রাত কাটাতে হত। আতঙ্কে ঠিক মতো ঘুমোতে পারতেন না কেউই। এখনও যারা সেখানে আটকে রয়েছেন, তাঁদের নিয়েও গভীরভাবে চিন্তিত তাঁরা।

উল্লেখযোগ্যভাবে, গত ২৫ জুন ওড়িশায় কাজ করতে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের ১৬ জন শ্রমিককে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে ওড়িশা পুলিশ। এরপর একের পর এক আটকের খবর সামনে আসে। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টে এই ইস্যুতে প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। আদালতে জানানো হয়, ওড়িশা সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং বেশ কিছু শ্রমিককে ইতিমধ্যেই ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তবে এখনও কেউ আটকে রয়েছেন কি না, তা নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য আসেনি সরকারের পক্ষ থেকে।