Dilip Ghosh At Modi’s Rally : ১৮ জুলাই মোদীর সভায় আমন্ত্রিত দিলীপ, শমীক সভাপতি হতেই বাড়ছে গুরুত্ব?

17

ডিজিটাল ডেস্ক, ১৪ জুলাই : বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি এবং একসময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দিলীপ ঘোষ এবার আমন্ত্রণ পেলেন প্রধানমন্ত্রীর জনসভায়। ১৮ জুলাই দুর্গাপুরে অনুষ্ঠিত হতে চলা নরেন্দ্র মোদীর সভায় আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় রয়েছে দিলীপ ঘোষের নাম (Dilip Ghosh At Modi’s Rally)। এই আমন্ত্রণকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, অতীতে আলিপুরদুয়ার বা নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অমিত শাহের মতো নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিতে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ফলে দিলীপ ঘোষের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং দলের অন্দরে তাঁর অবস্থান নিয়ে জল্পনা ছড়ায়। এমনকি নিজেও তিনি প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন—“দলীয় বৈঠকে একটা চেয়ারও জোটে না,”—এই মন্তব্য ঘিরে তুমুল চর্চা হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে।

তবে বিজেপির নবনিযুক্ত রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। দায়িত্ব নেওয়ার সময়েই তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, দল চলবে ‘পুরনো ও নতুন’ সকলকে নিয়েই। আর এই আমন্ত্রণ সেই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হওয়ার ইঙ্গিত বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে সস্ত্রীক পৌঁছে গিয়েছিলেন বঙ্গ বিজেপির এই দাপুটে নেতা। সৌজন্যতা রক্ষা করতে গিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের অনেকের চক্ষুশূলও হয়েছিলেন তিনি। এরই মধ্যে একের পর এক সভা-সমিতিতে দিলীপের অনুপস্থিতিতে মনে করা হচ্ছিল বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতির। মাঝখানে তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও কানাঘুঁসো শোনা গিয়েছিল। দিলীপকেও এনিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন করা হলে তিনিও জল্পনা উসকে দিয়েছিলেন। এমনকী ‘জলও নেই, পোনাও নেই’ বলে বঙ্গ রাজনীতিতে ‘জল্পনা’র নয়া সংজ্ঞা দিয়েছিলেন তিনি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দিলীপ ঘোষ নিশ্চিতভাবেই উপস্থিত থাকবেন ১৮ জুলাই দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভায়। পাশাপাশি, দলের অন্দরের খবর, উত্তরবঙ্গে সংগঠন মজবুত করতে যে বিশেষ কর্মসূচির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তাতে মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন দিলীপ ঘোষই। নবনিযুক্ত রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের কৌশলী রাজনৈতিক অবস্থান ও দলের অভিজ্ঞ নেতাদের পুনরায় গুরুত্ব দেওয়ার এই প্রয়াস ইতিমধ্যেই সংগঠনের অন্দরমহলে প্রশংসিত হচ্ছে। পুরনো ও নতুন—দুই ধারার নেতাদের একসঙ্গে নিয়ে চলার এই পদক্ষেপকে দলের মধ্যে ঐক্য ফেরানোর পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দিলীপ ঘোষকে ফের প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো শুধুমাত্র সৌজন্য gesture নয়, বরং রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের ‘সেতুবন্ধন রাজনীতি’র এক স্পষ্ট ও কৌশলী বার্তা। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য বিজেপির অভ্যন্তরে চলা অন্তর্দ্বন্দ্ব, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং বিভাজনের আবহে এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হচ্ছে—দলকে ফের ঐক্যবদ্ধ করা এবং অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় নেতাদের এক ছাতার তলায় এনে সংগঠনকে মজবুত করা।