ডিজিটাল ডেস্ক ২১শে জুলাইঃ সপ্তাহের প্রথম কর্মব্যস্ত দিন। আর সেই দিনই কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলায়, অফিসপাড়ার ঢিলছোড়া দূরত্বে তৃণমূল কংগ্রেসের মেগা শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান। সকাল থেকেই কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। দূর-দূরান্ত থেকে শহিদ মঞ্চের উদ্দেশে আসতে শুরু করেছেন জোড়াফুল কর্মী-সমর্থকরা। আর তা নিয়েই শিল্পাঞ্চলের স্থানীয়দের কপালে চিন্তার ভাঁজ গভীর হয়েছে(Traffic In Asansol)।
২১ জুলাই উপলক্ষে তৃণমূল সমর্থকদের জনসভায় নিয়ে যেতে বিপুল সংখ্যক বাস এবং অন্য যানবাহনে টান পড়েছে। এই অবস্থায় নিয়মিত অফিসযাত্রী থেকে স্কুল–কলেজের পড়ুয়ারা কী ভাবে গন্তব্যে পৌঁছবেন, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।জানা গিয়েছে, বাস বুকিং করা নিয়ে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে কোথাও কোথাও ব্লক নেতৃত্বের রীতিমতো দ্বন্দ্ব হয়েছে। ব্লক এলাকায় যাঁরা থাকেন, তাঁরা স্থানীয় বাস মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যখন বড় বাস নিতে যাচ্ছেন, তখন জেলার তৃণমূল নেতারা জানিয়ে দিচ্ছেন, এ ভাবে বাস বুক করা যাবে না।
জেলাস্তর থেকে আগেই ওই অঞ্চলের বাসের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া হয়েছে। আসানসোল মহকুমার তৃণমূলের এক ব্লক সভাপতির মন্তব্য, ‘আমরা জেলার নেতাকে বলেছি, তা হলে আমাদের ব্লক থেকে কেউ যাবে না। আপনারাই সব নিয়ে নিন।’আসানসোল মহকুমা বাস অ্যাসোসিয়েশনের অন্তর্গত ১৮০টি বড় বাসের মধ্যে ১৩০টি তুলে নেওয়া হয়েছে। দূরপাল্লার তুলনায় স্থানীয় রুটে চলা বাসের সংখ্যা বেশি। দূরপাল্লার বাসের মধ্যে চিত্তরঞ্জন–বর্ধমান, চিত্তরঞ্জন–মুকুটমনিপুর সমেত কিছু বাস তোলা হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি সমস্যায় রয়েছে বরাকর -আসানসোল, রানিগঞ্জ-আসানসোল, বার্নপুর-আসানসোল, চিত্তরঞ্জন-আসানসোল রুট। দু’একটি করে বাস রেখে সমস্ত বাস যাবে কলকাতায়। রানিগঞ্জ থেকে আসানসোলের মধ্যে ৩২টি বাসের ৩০টি তোলা হয়েছে। বরাকর–আসানসোলের ক্ষেত্রেও একই ছবি। আসানসোল-চিত্তরঞ্জন রুটে কোনও স্থানীয় স্তরের বাসই থাকছে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সুযোগে বিপুল মুনাফা করবে অটো এবং টোটো। রূপনারায়ণপুর থেকে নিয়মিত আশিস ঘোষ বাসে চেপে আসানসোলে কর্মসূত্রে যান। তিনি বলছেন, ‘অটো বা টোটো বিশাল টাকা হাঁকবে যাতায়াতের জন্য। এই টাকা না–দিলে কর্মস্থলেও পৌঁছতে পারব না।’বরাকর থেকে যাঁরা নিয়মিত আসানসোলে আসেন, সেই সব নিত্যযাত্রীরা টোটো বা অটো রিজ়ার্ভ করবেন বলে ঠিক করেছেন। তবে তাতেও প্রত্যেককে কমপক্ষে ৭০–৮০ টাকা দিতেই হবে।
আসানসোল বাস অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্তা রাজেন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য,‘আমরা ৭০ শতাংশ বাস দিয়েছি। বেশিরভাগ লোকাল রুটের বাসগুলি দেওয়া হয়েছে। দূরপাল্লার বাস কম নেওয়া হয়েছে। কিছু বাস আছে, যেগুলো অন্য জেলা থেকে আমাদের জেলায় আসে, সেগুলিও সেই জেলা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে।’আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনে সাধারণ সম্পাদক সুদীপ রায়ের মন্তব্য, ‘কোনও বাস অ্যাসোসিয়েশনগত ভাবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে চাওয়া হয়নি। তবে মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু মিনিবাস নেওয়া হয়েছে। তা নিয়ে আমরা কিছু বলতে পারি না।’