ডিজিটাল ডেস্ক ২১শে জুলাইঃ বাংলায় অনুপ্রবেশ নিয়ে কুৎসা শুরু করেছে বিজেপি। অভিযোগ করা হচ্ছে, ১৭ লক্ষ রোহিঙ্গা বাস করছে পশ্চিমবঙ্গে। একুশের মঞ্চ থেকে বিজেপির এই অভিযোগের পালটা সুর চড়ালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পালটা তোপ দেগে মমতার প্রশ্ন, রাষ্ট্রসংঘ বলছে সারা পৃথিবীতে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লক্ষ। তাহলে বাংলায় ১৭ লক্ষ রোহিঙ্গা কোথায় পেলেন বিজেপি নেতারা? শুধু তাই নয়, অনুপ্রবেশ ও দেশজুড়ে বাংলা ও বাঙালি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠলেন তৃণমূল নেত্রী। বৃহত্তর পরিসরে আন্দোলনের ডাক দিলেন তিনি(Mamata Banerjee)।
বাংলা ভাষাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশী বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলায়। বিজেপির বিরুদ্ধে এই ইস্যুতে প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত করার পাশাপাশি সুর চড়াচ্ছে তৃণমূল। আজ ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যাওয়ার সময় দেখা গেল ‘বাঙালী প্রধানমন্ত্রী চাই’। সংখ্যালঘু ভোট, লক্ষ্মী ভান্ডারের মত প্রকল্প এবং বাঙালী অস্মিতাকে উস্কে দিয়ে ২৬ এর বিধানসভা ভোট বৈতরণি পার হয়ে যাবে তৃনমূল।
কিন্তু তাদের পাখির চোখ ২৯ এর লোকসভায়। তার দেওয়াল লিখন ২১ জুলাই থেকে শুরু হয়ে গেল। পূর্ব বর্ধমানের মেমারী থেকে এসেছেন বাসুদেব মন্ডল। তার হাতে বাঙালী প্রধানমন্ত্রী চাই পোস্টার। কেন এই পোস্টার নিয়ে ধর্মতলা সভায়? তৃণমূল কর্মী বাসুদেব বলেন, ‘কেন্দ্র সরকার বাংলা বিদ্বেষী। বাঙলাকে বঞ্চনা করছে প্রতিনিয়ত। তাই বাংলার মানুষ বাঙালী প্রধানমন্ত্রী চায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই প্রধানমন্ত্রী দেখতে চায়।’
বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন বা SIR শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। যার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে তালিকা থেকে। এই ইস্যুতে বিজেপি সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে মমতা বলেন, “একটা নোটিফিকেশন লুকিয়ে বানিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যে পাঠিয়ে বলা হয়েছে যাকেই সন্দেহ হবে, বাংলায় কথা বলে, তাঁকে অ্যারেস্ট করবে, ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে এক মাস।” বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে হাজার হাজার বাংলাভাষী মানুষকে জেলবন্দি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, “বাংলা ভাষার ওপর বিরাট সন্ত্রাস চলছে, ওরা বলছে বাংলা ভাষায় কথা বলা যাবে না, কে মাছ খাবে, ডিম খাবে ওরা ঠিক করে দিচ্ছে। বাংলা এসব মানবে না, সব মানুষের অধিকার এখানে সুরক্ষিত করা হবে।” একই সুরে বলেন, “বিজেপির এক নেতা বলছে, বাংলায় নাকি ১৭ লক্ষ রোহিঙ্গা আছে। সারা পৃথিবীতে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা কত? ইউএন বলছে দশ লক্ষ রোহিঙ্গা আছে। কোথায় পেলেন ১৭ লক্ষ?”
অনুপ্রবেশ ইস্যুতে মোদি সরকারকে একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। বারবার অনুপ্রবেশের দায় বাংলার সরকারের উপর চাপানোর চেষ্টা করেছে বিজেপি। সে প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে বিএসএফ। যারা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন। তাহলে সেখান থেকে যদি কেউ অনুপ্রবেশ করে তাহলে তার দায় কীভাবে রাজ্য সরকারের হয়। যদি অনুপ্রবেশ হয়ে থাকে তবে সেটা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অধীনে থাকা বিএসএফের ব্যর্থতার জন্য।