Jagdeep Dhankhar:হটাৎ ইস্তফা উপরাষ্ট্রপতির,ধনখড়ে ঘনীভূত রহস্য ?

17

ডিজিটাল ডেস্ক ২২শে জুলাইঃ সোমবার সন্ধ্যায় উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে ইস্তফা দিলেন জগদীপ ধনখড়। তিনি জানিয়েছেন,স্বাস্থ্যগত কারণেই এই পদত্যাগ। চিকিৎসকদের পরামর্শেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বার থেকে স্বাস্থ্যকেই অগ্রাধিকার দেবেন তিনি। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে একটি চিঠি লিখে পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন ধনখড়। ওই চিঠিতে তিনি অবিলম্বে তাঁর পদত্যাগ কার্যকর করার অনুরোধ করেছেন। তাঁর ‘অটল সমর্থন’ এবং তাঁদের দুজনের মধ্যে ‘শান্তিপূর্ণ এবং চমৎকার কর্মসম্পর্ক বজায় রাখা’র জন্য রাষ্ট্রপতিকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ৭৪ বছর বয়সি ধনখড় আরও জানান, উপরাষ্ট্রপতি থাকাকালীন তিনি ভারতের অসাধারণ অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছেন। ২০২২ সালের অগস্টে উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্বগ্রহণ করেছিলেন ধনখড়। বিরোধী শিবিরের প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে ৩৪৬ ভোটে হারিয়ে দেশের উপরাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন তিনি(Jagdeep Dhankhar)।

সোমবার ২১ জুলাই রাতে হঠাৎ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মকে নাতিদীর্ঘ একটি চিঠি পাঠান ধনকড়। ওই চিঠিটিই ছিল উপ রাষ্ট্রপতি পদ থেকে তাঁর ইস্তফা পত্র (Jagdeep Dhankar resigns)। চিঠিতে ধনকড় লেখেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই তিনি উপ রাষ্ট্রপতি পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন। অথচ মজার ঘটনা হল, এদিন বিকেল ৩ টে বেজে ৫৩ মিনিটে তাঁর সচিবালয় থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়, ২৩ জুলাই দুদিনের জন্য জয়পুর সফরে যাবেন উপ রাষ্ট্রপতি।

ধনকড়ের অনুমতি ছাড়া তাঁর সচিবালয়ের পক্ষে এই প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করা সম্ভব নয়। অর্থাৎ বিকেল ৪টে পর্যন্তও ঠিক ছিল তিনি উপ রাষ্ট্রপতি হিসাবে জয়পুরে যাবেন। জাতীয় রাজনীতির তাই অনেকেই মনে করছেন, হয়তো এদিন সন্ধের পর এমন কিছু ঘটেছে যার ফলে তিনি ইস্তফা দিলেন বা দিতে বাধ্য হলেন। নইলে এমন তো হতে পারে না যে সন্ধের পর তাঁর শরীর খারাপ হল আর ধনকড় ইস্তফার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন!

সোমবার রাতে জয়রাম বলেন, “আজ বিকেল ৫টা নাগাদ আমি এবং আরও কিছু সাংসদ উপ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেছি। এমনকি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টাতেও ফোনে কথা হয়েছে তাঁর সঙ্গে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই পদত্যাগের খবর! নিঃসন্দেহে ধনকড়জি নিজের স্বাস্থ্যের দিকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, সেটাই হওয়া উচিত। কিন্তু এই সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত পদত্যাগের পেছনে আরও কিছু বিষয় রয়েছে—এটা স্পষ্ট। যদিও এখন জল্পনার সময় নয়।”

জয়রাম রমেশ আরও বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ১টায় সংসদের ব্যবসা উপদেষ্টা কমিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডাকা হয়েছে। তা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসাবে জগদীপ ধনকড়ই ডেকেছিলেন। বিচারব্যবস্থাকে নিয়ে কিছু বড় ঘোষণা করার কথাও ছিল তাঁর। সেই প্রেক্ষিতে তাঁর এই আকস্মিক সরে দাঁড়ানো আরও বিস্ময়ের জন্ম দিচ্ছে।

কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদকের কথায়, “ধনকড়জি সরকার ও বিরোধীপক্ষ—দু’পক্ষকেই কঠোরভাবে দায়বদ্ধ রাখতে চেয়েছেন। আমরা তাঁর সুস্থতা কামনা করি। একইসঙ্গে অনুরোধ করি, তিনি যেন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করেন। প্রধানমন্ত্রীকেও অনুরোধ করি, জাতীয় স্বার্থে তাঁকে এই সিদ্ধান্ত থেকে ফেরানো হোক। বিশেষত কৃষকসমাজ এই সিদ্ধান্ত বদলে স্বস্তি পাবে।”

জগদীপ ধনকড়ের পদত্যাগ ঘিরে আপাতত রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা ও কৌতূহল তুঙ্গে। যদিও সরকারি তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে অতিরিক্ত কিছু জানানো হয়নি। ১৯৭৮-৭৯ সালে রাজস্থানের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে স্নাতক উত্তীর্ণ হন ধনখড়। আইনজীবী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ দিন রাজস্থানের হাই কোর্ট এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে ওকালতি করেছেন ধনখড়। ১৯৮৯ সালে রাজনীতিতে পা দেন। সেই বছর রাজস্থানের ঝুনঝুনু লোকসভা কেন্দ্র থেকে জনতা দলের প্রার্থী হয়ে লড়েন। জেতেনও। ১৯৯০ সালে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হন। পরে বিধানসভা নির্বাচনেও লড়ে জেতেন। ২০০৩ সালে বিজেপি যোগ দেন।