Abhishek On Satyajit Roy House Controversy : এবার সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের ভিটে ভাঙা নিয়ে সরব অভিষেকও
ডিজিটাল ডেস্ক, ১৬ জুলাই : বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায় সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনায় মঙ্গলবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার পরদিন, বুধবার সেই ইস্যুতে সরব হন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek On Satyajit Roy House Controversy)। তিনি বলেন, বাংলা সংস্কৃতিতে রায় পরিবারের অবদান অতুলনীয়। সেই ঐতিহ্য রক্ষায় পারিবারিক ভিটে সংরক্ষণ জরুরি। অভিষেক কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে আহ্বান জানান, বিষয়টি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে রায় পরিবারের পূর্বপুরুষের ভিটে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হোক।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডেইলি স্টার’ এবং ‘প্রথম আলো’-র প্রতিবেদনে প্রথম উঠে আসে সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক বাড়ি ভাঙার খবর। সেই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ময়মনসিংহ জেলার সদর শহরের হরিকিশোর রায় রোডে অবস্থিত ঐতিহাসিক ওই বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে শিশু অ্যাকাডেমির কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হত। ‘প্রথম আলো’-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৭ সালের পর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। এরপরই ওই জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করে শিশু অ্যাকাডেমি এবং সেই উদ্দেশ্যে ভাঙার কাজ শুরু হয়। জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে তৎকালীন সেনাশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আমলে শিশু অ্যাকাডেমি প্রথম এই বাড়িটি ব্যবহার করা শুরু করে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডলে প্রকাশিত বার্তায় লিখেছেন, ‘‘অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক বাড়ি ভেঙে ফেলার খবর আমাকে গভীরভাবে মর্মাহত করেছে। এই শতাব্দীপ্রাচীন বাড়িটি ছিল সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর, যিনি বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির জগতে এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব।’’ তিনি বাংলাদেশ সরকারের কাছে এই ঐতিহাসিক সম্পত্তি সংরক্ষণের আবেদন জানিয়েছেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে তাঁর অনুরোধ, ‘‘বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই বাড়িটি। একে রক্ষা করতে ভারতের উচিত বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসা।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেছেন, ‘‘রায় পরিবার বাংলার সংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক। উপেন্দ্রকিশোর ছিলেন বাংলার নবজাগরণের এক গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। সেই কারণে আমি মনে করি, এই বাড়িটি বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমি বাংলাদেশ সরকার এবং সে দেশের সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, এই ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি যেন সংরক্ষিত থাকে। ভারত সরকারও বিষয়টির দিকে নজর দিক।’’
মঙ্গলবার রাতেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে নয়াদিল্লি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এক সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ময়মনসিংহে অবস্থিত, বাংলাদেশ সরকারের অধীন ওই ভবনের সংস্কার প্রয়োজন। ভারত সরকারের তরফে বাংলাদেশকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে সেটিকে সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রদর্শশালায় রূপান্তর করার কথা ভাবা হোক। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, ভবনটি সংরক্ষণ ও পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজন হলে ভারত আর্থিক সহায়তা দিতেও প্রস্তুত।