Bharat Bandh : কোথাও পুলিশের ‘চড়’, কোথাও ‘লাঠিচার্জ’, অবরোধের জেরে বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে ট্রেন, জানুন কোথায় কী অবস্থা?

16

ডিজিটাল ডেস্ক, ৯ জুলাই : কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রমিক ও কৃষক-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে বুধবার দেশজুড়ে ধর্মঘট (Bharat Bandh) পালন করছে বাম দলগুলি। এই প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে যাদবপুরে সিপিএমের মিছিল বের হয়, তবে আচমকাই সেই মিছিল ঘিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যা এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।

দ্রুত নেভানোর চেষ্টা আগুন লাগার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়, তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিছিলের সময় হঠাৎই ধোঁয়া ও আগুন দেখা যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৎপর হন উপস্থিত কর্মী ও দমকল বাহিনী। প্রতিবাদ কর্মসূচির মাঝে আকস্মিক বিপর্যয় অগ্নিকাণ্ডের ফলে মিছিলে সাময়িক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, যদিও পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনায় এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার জেরে গাঙ্গুলিবাগান মোড়ে বাম কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের কার্যত খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। অভিযোগ, পুলিশ একের পর এক দোকানে ঢুকে শাটার নামিয়ে দেয়। এরপর সৃজন ভট্টাচার্যকে চ্যাংদোলা করে এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। ধাক্কাধাককির মধ্যেই তাঁর শার্ট ছিঁড়ে যায়। সৃজনের দাবি, এই ধস্তাধস্তির সময় তিনি আহত হয়েছেন।

অভিযোগ, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় মহিলা বাম-সমর্থকরাও আক্রান্ত হন। এক মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়লেও উত্তেজনা কিছুতেই কমেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছান ডিসি, এসএসডি বিদিশা কলিতা। এদিকে, তৃণমূল ও বিজেপিকে নিশানা করে হুংকার দেন এসএফআই নেতা সৃজন ভট্টাচার্য। তিনি স্পষ্ট জানান, মিছিল হবেই। শেষমেশ পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে সৃজন-সহ মোট ১৯ জনকে আটক করে পুলিশ।

ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষিপ্ত অশান্তি। কোথাও বাম কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি, আবার কোথাও রেল অবরোধ ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে বিশৃঙ্খলা। এর জেরে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছে নিত্যযাত্রীদের। বনধ (Bharat Bandh) সফল করতে এদিন সকালেই রাস্তায় নামেন বাম কর্মী-সমর্থকরা। অন্যদিকে, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে তৎপর দেখা যায় পুলিশকে। বনধকে কেন্দ্র করে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনও রয়েছে সতর্ক অবস্থানে। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। ইতিমধ্যেই নবান্নের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, বনধের দিন সরকারি অফিসে কর্মীদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।

সকালে শিয়ালদহ মেন লাইনের বেলঘরিয়া, ব্যারাকপুর, কৃষ্ণনগর-সহ একাধিক জায়গায় রেল অবরোধে নামে ধর্মঘটকারীরা। ফলে মাঝপথেই থেমে যায় ট্রেন চলাচল। পুলিশ ধর্মঘটকারীদের সরাতে গেলে শুরু হয় বচসা, যা পরে হাতাহাতির রূপ নেয়। এর ফলে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেনগুলি। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখাতেও একাধিক স্থানে রেল অবরোধের চেষ্টা করা হয়। যাদবপুর স্টেশনেও দেখা যায় একই চিত্র। বামপন্থী কৃষক ক্ষেত মজুর সংগঠন তারকেশ্বরের তালপুর স্টেশনে তারকেশ্বর-আরামবাগ লোকাল ট্রেন অবরোধ করে। শ্রমিক ও কৃষক-বিরোধী কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির প্রতিবাদে প্রায় ২৫ কোটিরও বেশি শ্রমিক ও কর্মচারী রাস্তায় নামেন। যার প্রভাবে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে আগে থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল।

পাশাপাশি দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে সিপিএম কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তিতে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, সেই সময় এক সিপিএম নেতাকে সপাটে চড় মারেন এক পুলিশকর্মী। পরে ওই নেতাকে আটকও করা হয়। বাম নেতাকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে বংশীহারি থানার আইসি-র বিরুদ্ধে।

বনধ (Bharat Bandh) সফল করতে এদিন সকাল থেকেই রাস্তায় নেমে পড়েন বাম কর্মী-সমর্থকরা। অন্যদিকে, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সক্রিয় ছিল পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে বাম কর্মীরা। জলপাইগুড়িতেও একই চিত্র দেখা যায়। বনধ কার্যকর রাখতে রাস্তায় টহল ও নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন। জলপাইগুড়িতে এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রেল পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ান ধর্মঘটকারীরা। বাস আটকানোর চেষ্টা করায়, পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা।