বড়বাজারের অগ্নিকাণ্ডে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত হোটেল পরিদর্শন, সঙ্গে দমকলমন্ত্রী, পুলিশ কমিশনার
কলকাতা, ১ মে: বড়বাজারে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হোটেল পরিদর্শনে পৌঁছালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। মুখ্যমন্ত্রী আশপাশের বেশ কিছু বাড়ির দুরবস্থাও নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, আগুন লাগা হোটেলটি ‘সিল’ করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, আগুন নেভানোর সময় দমকলকর্মীরা যখন ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন, তখন হোটেলের দরজা বন্ধ ছিল।
আশপাশের বাড়িগুলির পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বহু বাড়িতে ১০টি পর্যন্ত পরিবার একসঙ্গে বসবাস করেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি তাঁদের সকলকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।
বড়বাজারের হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। মুখ্যমন্ত্রী আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ির দুরবস্থা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, আগুন লাগা হোটেলটি সিল করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, দমকলকর্মীরা যখন আগুন নেভাতে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন, তখন হোটেলের দরজা বন্ধ ছিল, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
বড়বাজারের অগ্নিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাঁদের বেশিরভাগের প্রাণ গেছে দমবন্ধ হয়ে। দুর্ঘটনার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ব মেদিনীপুর সফরে ছিলেন। তবে কলকাতায় ফিরে বৃহস্পতিবারই তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছন। মমতা জানান, দিঘায় থাকাকালীনও তিনি সারা রাত পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছিলেন এবং দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও কলকাতা পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হোটেলটি বহু পুরনো, ১৯৮৯ সাল থেকে তা চালু রয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি আশপাশের বেশ কিছু বাড়ির জীর্ণ দশা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একটি বাড়ির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, তার ছাদ ভেঙে পড়ার মতো বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। এসব বাড়ির সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ, পুরসভা ও দমকল বিভাগকে একযোগে আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি নির্দেশ দেন, সংস্কারের সময় যেন ওই বাড়িগুলির বাসিন্দাদের কিছু দিনের জন্য অন্যত্র থাকার উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হয়।
আশপাশের বাড়িগুলির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের জমি বা ঘর নিয়ে সমস্যা থাকতে পারে, বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটিয়ার মধ্যেও ঝামেলা হতে পারে। তবে আপনাদের বুঝতে হবে, এটি জীবন-মরণের বিষয়। যদি ভালভাবে জীবন কাটাতে চান, তাহলে এখানে যারা সশরীরে বসবাস করছেন, তাঁদের সঙ্গে পুলিশ ও পুরসভা কথা বলবে।” তিনি আরও বলেন, আইনি জটিলতা সংক্রান্ত বিষয়গুলি আদালতকেও বিবেচনা করার জন্য বলা হবে এবং এর জন্য সবাইকে আশ্বস্ত করেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ওই হোটেলটি সিল করে দেওয়া হবে এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য তিনি একটি বিশেষ কমিটি গঠন করবেন।
Comments are closed.