ডিজিটাল ডেস্ক, ১৩ মে : জাল পাসপোর্ট কেলেঙ্কারিতে নতুন মোড় এসেছে। পাকিস্তানি নাগরিক আজাদ মল্লিক ওরফে আজাদ হোসেন এবং তার সহযোগীদের সঙ্গে প্রায় ৫০ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পেয়েছে ইডি। গত তিন-চার বছরে বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পর্যায়ক্রমে এই বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ জমা হয়েছে। শুধু ভুয়া পাসপোর্টই নয়, ‘পাসপোর্ট আজাদ’ নামে পরিচিত এই ব্যক্তি ভুয়ো ভিসাও তৈরি করত, আদালতে জানিয়েছে ইডি (Fake Visa Azad Mallick)।
মঙ্গলবার ‘পাসপোর্ট আজাদ’ ওরফে আজাদ মল্লিককে আদালতে পেশ করা হয়, যেখানে তদন্তকারীরা তার বিরুদ্ধে একাধিক নতুন তথ্য প্রকাশ করেন। তাদের দাবি অনুযায়ী, শুধু জাল পাসপোর্টই নয়, আজাদ মল্লিক ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি দুবাই, কম্বোডিয়া ও মালয়েশিয়ায় জাল ভিসাও তৈরি করত। এই প্রতারণার মাধ্যমে বহু পাকিস্তানি নাগরিককে ইউরোপে পাঠানো হয়েছিল। এখন তদন্ত চলছে—জঙ্গিদেরও কি সে নকল পাসপোর্ট ও ভিসার মাধ্যমে ইউরোপে পাঠিয়েছে? তদন্তকারীরা এই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছেন।
ইডি জানিয়েছে, আজাদ মল্লিকের কাছ থেকে দুটি ভোটার কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে—একটি নৈহাটি বিধানসভা এলাকার, অপরটি রাজারহাট-গোপালপুর বিধানসভার। কেন সে দুটি ভোটার কার্ড রেখেছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, এই কার্ডগুলি তৈরি করতে কারা তাকে সহায়তা করেছিল, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কিছুদিন আগে ভুয়া পাসপোর্ট মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) আজাদ মল্লিককে গ্রেপ্তার করে। প্রথমে গোয়েন্দারা ধারণা করেছিলেন যে তিনি বাংলাদেশি। তবে, উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটির তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পাকিস্তানের ড্রাইভিং লাইসেন্স উদ্ধার করা হয়, যেখানে নাম ছিল আজাদ হোসেন। তদন্তের পর ইডির গোয়েন্দারা নিশ্চিত হন যে এটি আসলে আজাদ মল্লিকেরই পরিচয়পত্র।
এরপর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন, যেখানে উঠে আসে যে তার পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ থাকতে পারে। এখন পর্যন্ত অন্তত ২০০টি ভুয়া ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে, তার ভিত্তিতে জাল পাসপোর্ট তৈরি করেছে আজাদ। ইডি কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, এই সংখ্যা ৫০০-এ পৌঁছাতে পারে।