ডিজিটাল ডেস্ক, ১৪ মে : সংঘর্ষবিরতির পর ভারত ও পাকিস্তান বন্দি বিনিময় করেছে। সকালেই পাকিস্তান পঞ্জাব সীমান্ত থেকে আটক বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউকে মুক্তি দিয়েছে (India Released Pak Rangers)। এরপর ভারত রাজস্থান থেকে আটক পাক রেঞ্জারকে মুক্তি দেয়।
গত ২৩ এপ্রিল, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরদিন, পঞ্জাবের পঠানকোটে কর্মরত থাকাকালীন ভুলক্রমে পাকিস্তানে প্রবেশ করেন পূর্ণম। তিনি একটি গাছের নিচে বিশ্রাম নেওয়ার সময় পাক রেঞ্জার্স তাঁকে আটক করে। সাধারণত, সীমান্তে এ ধরনের ঘটনায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ অনুষ্ঠিত হয়, যার পর সংশ্লিষ্ট জওয়ানকে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে পাকিস্তান তখন পূর্ণমকে মুক্তি দেয়নি। আসলে, তার আগের দিনই জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারান। এই পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।
গত ৩ মে এক পাক রেঞ্জার সীমান্ত লঙ্ঘন করে রাজস্থানে প্রবেশ করলে তাঁকে বন্দি করা হয়। এরপর ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং পাক রেঞ্জার্সের মধ্যে একাধিক ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ অনুষ্ঠিত হয়, তবে সমস্যা সমাধান হচ্ছিল না। ১০ মে ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষবিরতির পর জট কাটার আশার সৃষ্টি হয়েছিল। অবশেষে বুধবার দুই দেশই বন্দিদের তাঁদের নিজ নিজ দেশে প্রত্যর্পণ করল।
সকালে ওয়াঘা-অটারী সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, ২০ দিন বন্দি থাকার পর তিনি দেশে ফিরলেন। অপর দিকে, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে ভারত পাকিস্তানি রেঞ্জার মোহাম্মদ্দুল্লাহ্কেও মুক্তি দিয়েছে, এবং বুধবার সকালে তাঁকে তাঁর দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। দুই দেশ প্রোটোকল অনুসরণ করে বন্দিদের হস্তান্তর কার্যকর করেছে। বিএসএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের কনস্টেবল পূর্ণমের প্রত্যর্পণ পাকিস্তান রেঞ্জার্সের সঙ্গে নিয়মিত ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ এবং অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফল।
বাংলার বাসিন্দা বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমের মুক্তির খবরে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দুপুরে সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘‘আমাদের বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউয়ের মুক্তির খবর শুনে আমি আনন্দিত। আমি তাঁর পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলাম। তাঁর স্ত্রী রিষড়ায় রয়েছেন, এবং আমি তাঁর সঙ্গে তিন বার কথা বলেছি। আজও ফোনে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের সাহসী জওয়ান ভাই, তাঁর স্ত্রী রজনী ও তাঁদের পরিবারের জন্য আমার আন্তরিক শুভকামনা।’’ অন্য দিকে, বিএসএফ জওয়ানের স্ত্রী রজনী সাউ জানিয়েছেন, তাঁর স্বামীর মুক্তির খবর বিএসএফ কর্তৃপক্ষ আগেই তাঁকে জানিয়েছিল। বুধবার সকালে তিনি স্বামীর সঙ্গে ভিডিও কলের মাধ্যমে কথা বলেন। দীর্ঘ তিন সপ্তাহের উদ্বেগ এবং অপেক্ষার পর পরিবার অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে।
Comments are closed.