India Struck Pakistan Nuclear Plant : ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ ভারতের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত পাক পরমাণু ঘাঁটিও! উপগ্রহ চিত্রে চাঞ্চল্য
ডিজিটাল ডেস্ক, ২০ জুলাই : বিদেশি উপগ্রহচিত্র বিশ্লেষক ড্যামিয়েন সাইমন সম্প্রতি দাবি করেছেন, সাম্প্রতিক অপারেশনের সময় ভারতের এক ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে আছড়ে পড়েছিল কিরানা পাহাড়ে—যেখানে পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্রের ঘাঁটি গড়ে তুলেছে বলে মনে করা হয়। যদিও এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত নয়াদিল্লি বা ইসলামাবাদ—দুই পক্ষেরই কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এর আগেই ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়েছিল, কিরানা হিলস এলাকায় কোনও রকম হামলা চালানো হয়নি (India Struck Pakistan Nuclear Plant)।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সারগোধা জেলায় অবস্থিত কিরানা পাহাড় অঞ্চল দেশটির সেনাবাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ধারণা করা হয়, পাকিস্তানের যে প্রায় ১৭০টি পরমাণু ওয়ারহেড রয়েছে, তার অনেকগুলো দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে রাখা হয়েছে, যার মধ্যে কিরানা হিলস অন্যতম। আগেই জল্পনা শুরু হয়েছিল যে, ভারতের হামলায় এই পাহাড়ি অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সম্প্রতি গুগল আর্থে প্রকাশিত নতুন উপগ্রহচিত্র সেই সন্দেহকে আরও জোরালো করেছে। সেগুলি বিশ্লেষণ করে উপগ্রহচিত্র বিশ্লেষক ড্যামিয়েন সাইমন দাবি করেছেন, গত মে মাসে ওই এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলির চিহ্ন স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। সাইমন আরও একটি ছবি প্রকাশ করেছেন, যা সারগোধা বিমান ঘাঁটির। তাঁর দাবি, সেখানেও ভারতের তরফে হামলা চালানো হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সেই রানওয়ে মেরামত করা হয়েছে এবং এখন তা কার্যকর অবস্থায় রয়েছে।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর কিরানা হিলস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা, তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর জল্পনা শুরু হয়। অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেন, ভারত সেখানেই হামলা চালিয়েছে। তবে সেই দাবি সরাসরি নাকচ করে দেন এয়ার মার্শাল এ কে ভারতী। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘‘না, ভারত কিরানা হিলসে কোনও হামলা চালায়নি।’’ এমনকি তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কিরানা হিলসে পরমাণু ঘাঁটি রয়েছে—এই তথ্য আমাদের জানানোর জন্য ধন্যবাদ। আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনও তথ্য নেই। আর সেখানে যাই থাকুক না কেন, ভারত সেখানে হামলা চালায়নি।’’ তবে এবার ফের বিতর্কের ঝড় উঠেছে উপগ্রহচিত্র বিশ্লেষক ড্যামিয়েন সাইমনের সাম্প্রতিক দাবিকে ঘিরে, যেখানে তিনি কিরানা হিলসে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের চিহ্ন থাকার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন।
গত ২২ মে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। এর পর প্রতিক্রিয়ায় একাধিক কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে ৬ মে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে চালানো হয় প্রত্যাঘাত, যার নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারত জানায়, এই অভিযানে নির্দিষ্ট পাক জঙ্গিঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে এবং কোনও সাধারণ নাগরিককে লক্ষ্য করা হয়নি। তবে পাকিস্তানের পাল্টা দাবি, ওই হামলায় বহু সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এর জেরে টানা চার দিন ধরে সীমান্তে উত্তেজনা ও সংঘর্ষ চলে দুই দেশের মধ্যে। অবশেষে ১০ মে উভয় পক্ষ সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়। তবু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এখনও বরফ গলেনি। এই আবহেই ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বিদেশি বিশ্লেষকের নতুন দাবিতে ফের চাঞ্চল্য ও জল্পনা শুরু হয়েছে।