ISI New SPY Asset : ISI-এর নতুন ছক! ভারতে গুপ্তচর অ্য়াসেট?

9

ডিজিটাল ডেস্ক, ২০ মে : পাকিস্তানি গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ভারতীয় নেটপ্রভাবী ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্র। হরিয়ানার বাসিন্দা জ্যোতি মূলত ভ্রমণ সংক্রান্ত ভিডিও ইউটিউবে পোস্ট করতেন। তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ওঠার পরই তাঁকে আটক করা হয়।

জ্যোতি মলহোত্রার বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ উঠেছে, যা দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে। এরই মধ্যে জানা গেছে, গত বছর চিন সফরের সময়ও তিনি বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন এবং সেই ঘটনায় সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন।

২০২৪ সালে চিন সফরে গিয়েছিলেন ৩৩ বছর বয়সী নেটপ্রভাবী। সফরকালীন তিনি বেশ কয়েকটি ভ্রমণ ভিডিও শেয়ার করেন, যা ব্যাপক বিতর্ক তৈরি করে এবং তাঁকে নেটাগরিকদের তীব্র সমালোচনার মুখে ফেলেছিল। অভিযোগ অনুযায়ী, সাংহাই থেকে বেজিংগামী একটি দ্রুত গতির ট্রেনে যাত্রার সময় জানলার ধারের আসন নিয়ে এক যাত্রীর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন জ্যোতি। চিনের এক স্থানীয় মহিলা চালককে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছিল জ্যোতি মলহোত্রার বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুযায়ী, চালক রাজি না থাকা সত্ত্বেও তাঁকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন তিনি। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে শেষ পর্যন্ত ওই চালককে পুলিশের সাহায্য নিতে হয়।

জ্যোতি মলহোত্রার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি বৈধ টিকিট ছাড়াই চিনে একটি যাত্রিবাহী বাসে উঠেছিলেন এবং পরে ভাড়া দিতে অস্বীকার করেন। এছাড়া, তিনি চালককে একটি অননুমোদিত স্থানে বাস থামানোর জন্য চাপ দেন, যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। অভিযোগ উঠেছে যে চিনে অবস্থানকালে জ্যোতি মলহোত্রা সে দেশের নাগরিকদের শারীরিক গঠন নিয়ে উপহাস করেছিলেন। পাশাপাশি, তিনি তাঁদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও ভাষা নিয়েও ঠাট্টা করেছিলেন, যা বিতর্কের সৃষ্টি করে।

জ্যোতি মলহোত্রার বিতর্কিত আচরণের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর সমাজমাধ্যমে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। নেটাগরিকদের একাংশ তাঁকে ‘অভদ্র’ ও ‘অভব্য’ বলে আখ্যা দেন। তাঁর আচরণের জন্য চিনে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়, এবং জানা গেছে যে চিনে তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। যদিও পরে ক্ষমা চেয়ে নেন জ্যোতি। তিনি জানিয়েছিলেন, ভাষাগত পার্থক্যের জন্যই তাঁর সঙ্গে চিনা নাগরিকদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল।

জানা যাচ্ছে ISI-এর নতুন ছক , ভারতে গুপ্তচর অ্য়াসেট, ভারতীয় সোশাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের চর বানিয়ে নজরদারি ISI-এর। গোপন তথ্য় পাচার থেকে পাক প্রোপাগান্ডার জন্য় ইনফ্লুয়েন্সারদের ব্যবহার। এই মডিউলে জ্য়োতি মালহোত্রাকে অ্য়াসেট বানায় ISI, ভারতের বিভিন্ন জায়গার গোপন তথ্য পাচার, নজরদারি চালাত জ্য়োতি। পাকিস্তানের পাশাপাশি চিন, বাংলাদেশেও পৌঁছে যায় জ্য়োতি! পাকিস্তান যাওয়ার ১ মাসের মধ্য়ে চিনে জ্য়োতি , এবার প্রশ্ন উঠছে এই সব কিছুর নেপথ্য়ে কী ISI (ISI New SPY Asset)?

পাকিস্তানি গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে শুক্রবার গ্রেফতার হয়েছেন জ্যোতি মলহোত্রা। পহেলগাঁও-কাণ্ডের পর থেকে পাকিস্তানি গুপ্তচরদের সঙ্গে ভারতীয় নাগরিকদের যোগাযোগের বেশ কিছু অভিযোগ সামনে এসেছে। গত কয়েক দিনে পঞ্জাব, হরিয়ানা ও রাজস্থান থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে একজন জ্যোতি।

জ্যোতি মলহোত্রার ইউটিউব চ্যানেলের নাম ‘ট্রাভেল উইথ জো’, যেখানে তিনি মূলত ভ্রমণ সংক্রান্ত ভিডিও পোস্ট করতেন। গত বছর তিনি কাশ্মীরে গিয়েছিলেন, এবং সেখানে ডাল হ্রদে শিকায়ায় ঘোরার ভিডিও আপলোড করেছিলেন। এছাড়া, শ্রীনগর থেকে বনিহাল যাওয়ার ট্রেনযাত্রার ভিডিও-ও পোস্ট করেছিলেন। গত এপ্রিল মাসে পহেলগাঁও-কাণ্ডের পর তিনি একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। জানা গেছে, তিনি দেশ-বিদেশে বিলাসবহুল হোটেলে থাকতেন এবং বিমানের বিজনেস ক্লাসে যাতায়াত করতেন। তবে, এত টাকা কীভাবে তাঁর কাছে আসত? বিশেষ কেউ কি সেই খরচ বহন করতেন?—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই কি তাঁকে অর্থ সাহায্য করত?—এ বিষয়েও তদন্ত চলছে।

অভিযোগ উঠেছে যে জ্যোতি মলহোত্রা পাকিস্তানে গিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লশকর-ই-তৈবার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে লশকর-ই-তৈবার প্রধান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মুরিদকে-তে তিনি গুপ্তচরবৃত্তির প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর তাঁকে একটি বিশেষ অভিযানের জন্য ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। তবে সেই অভিযান শুরুর আগেই হিসার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। জ্যোতির ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিয়ো ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, তিনি মাস দুয়েক আগে, অর্থাৎ পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার আগে পাকিস্তান গিয়েছিলেন।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, পহেলগাঁও হামলার কয়েক দিন আগেই পাকিস্তান সফর করেছিলেন জ্যোতি মলহোত্রা। তিনি ১৪ দিন মুরিদকেতে অবস্থান করেছিলেন, এবং জিজ্ঞাসাবাদের সময় সেই সফরের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে। তবে, তাঁকে কোন অভিযানের দায়িত্বে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পাকিস্তানে থাকাকালীন তিনি বিভিন্ন সংবেদনশীল এলাকায় অবাধে যাতায়াতের অনুমতি পেয়েছিলেন। এমনকি, পাক পুলিশ তাঁর জন্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল বলেও খবর রয়েছে। জ্যোতি অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেন, এবং লাহৌরের আনারকলি বাজার ও পাক পঞ্জাবের কটাস রাজ মন্দির পরিদর্শন করেন। তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে পাকিস্তানের খাবার ও ভারত-পাকিস্তানের সংস্কৃতির তুলনা সংক্রান্ত ভিডিও রয়েছে। তদন্তকারীদের সন্দেহ, সেই সময়ই তিনি মুরিদকেতে গিয়ে গুপ্তচরবৃত্তির প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় ভারতীয় সেনা মুরিদকের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করেছে।