ডিজিটাল ডেস্ক ১৭ই জুলাইঃ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ হোক বা আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব, প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুলিশের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ওয়্যারলেস ম্যানপ্যাক, চলতি কথায় যাকে বলে ওয়াকিটকি। এতদিন পর্যন্ত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ও ‘পুশ-টু-টক’ প্রযুক্তিতে চলা এই ওয়ারলেস ম্যানপ্যাক এবার আরও আধুনিক প্রযুক্তিতে রূপান্তরিত হল। ৪জি সিমচালিত এই বিশেষ ডিভাইস যুক্ত হল কলকাতা পুলিশে(Kolkata Police News)।
গতবছর একটি টেন্ডার ডাকা হয়েছিল কলকাতা পুলিশ ও ডিরেক্টরেট অফ সিকিউরিটির যৌথ উদ্যোগে। লক্ষ্য ছিল উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে পুলিশের কমিউনিকেশন সিস্টেমকে আরও মজবুত করা। অবশেষে সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়ে কলকাতা পুলিশের হাতে এসে পৌছেছে মোট ৪০০টি ৪জি সিমযুক্ত ম্যানপ্যাক। এর মধ্যে ৩৭০টি ইতিমধ্যেই বিতরণ করা হয়েছে শহরের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ডিভিশনে। ডিভিশনগুলির মধ্যে রয়েছে—সাউথ সাবারবান, পোর্ট, ভাঙড়, সাউথ ওয়েস্ট এবং ইস্ট ডিভিশন। প্রতিটি ডিভিশনের ডিসি, এসি এবং থানার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এই নতুন প্রজন্মের ওয়্যারলেস ডিভাইস। বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে শহরের বাইরে থাকা ভাঙড় ডিভিশন। দুর্বল কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের কথা মাথায় রেখে সেখানে সর্বাধিক সংখ্যক ডিভাইস পাঠানো হয়েছে। ট্রাফিক-থানার ওসি, অ্যাডিশনাল ওসিরাও পেয়েছেন এই ডিভাইস। অতিরিক্ত একটি রিজার্ভ ডিভাইস রাখা হয়েছে ভাঙড়ে।
এছাড়াও কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের সাউথ কন্ট্রোল রুমে একটিকে রাখা হয়েছে ভাঙড় ডিভিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য। শহরের পাঁচটি ডিভিশনে ৩৭০টি ডিভাইস দেওয়ার পরেও লালবাজারে ৩০টি ডিভাইস রাখা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য। এক ডিভিশন থেকে অন্য ডিভিশন কিংবা লালবাজারের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগের জন্য এই ডিভাইস কার্যকরী বলেই মনে করছেন আধিকারিকেরা।শুধু শহরের মধ্যেই নয়, পুলিশের যেসব টিম অভিযানের জন্য ভিন রাজ্যে রওনা দেয়, সেখান থেকেও কলকাতা পুলিশের সদর দফতরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখা সম্ভব হবে এই ডিভাইসের মাধ্যমে। ইতিমধ্যেই দিল্লি, আসাম সহ একাধিক রাজ্যে এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে।
বিশেষ ১৩ সংখ্যার সিম ব্যবহার করে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখা সম্ভব হচ্ছে বহু দীর্ঘ রেঞ্জ পর্যন্ত—যেখানে সাধারণ মোবাইল নেটওয়ার্ক পৌছয় না। তবে এই প্রযুক্তিরও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন, ইডেন গার্ডেনে ম্যাচ চলাকালীন বা বড়দিনে পার্ক স্ট্রিটের মতো জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় নেটওয়ার্কে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
এই সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে ভবিষ্যতে সমাধানের পথ খোঁজার দিকেই নজর দিচ্ছে কলকাতা পুলিশ। জনসমাগমের মধ্যে কীভাবে এই নতুন ডিভাইস আরও কার্যকর করে তোলা যায়, সেই লক্ষ্যে চলছে পরিকল্পনা। পুলিশের নিজেদের মধ্যে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা থেকে তদন্ত, পুলিশের কাজের গতি অনেকটাই বাড়াবে বলে মনে করছে লালবাজার।