Kolkata Rain Water Logging : একটানা রাতভর বর্ষণে জলমগ্ন কলকাতা, রেললাইনে জল জমে ব্যাহত ট্রেন চলাচল

18

ডিজিটাল ডেস্ক, ৮ জুলাই : কলকাতায় টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন বহু এলাকা। রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে থাকায় ব্যাহত হচ্ছে যানবাহন চলাচল, ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন অফিসগামী মানুষরা (Kolkata Rain Water Logging)।রেললাইনের উপর জল জমে যাওয়ায় উত্তর ও দক্ষিণ শহরতলিতে ট্রেন চলাচলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আজও দিনের বেশিরভাগ সময় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকবে। উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

শহরের একাধিক রাস্তায় জল জমে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক দুর্ভোগ। যানবাহনের সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় কম, ফলে ভুগতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। যদিও কলকাতা পুরসভা জল জমার বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখেছে এবং কর্তৃপক্ষ নিরবচ্ছিন্ন নজরদারির মাধ্যমে অতিরিক্ত জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেছেন, তবুও অবিরাম বৃষ্টিতে সেই প্রক্রিয়া বারবার বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। দক্ষিণ কলকাতার রাসবিহারী, বেহালা, বালিগঞ্জ থেকে শুরু করে উত্তরের ঠনঠনিয়া, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, উল্টোডাঙা—সবত্রই জলমগ্নতা চোখে পড়ছে। বাস, ট্রাম, ও ট্যাক্সির চলাচলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ায়, অফিসযাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে লাগছে অনেকটাই সময়।

কলকাতার বেশ কিছু জায়গায় জল জমে গিয়েছে। কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারের সামনে কিছু জায়গায় জল জমতে শুরু করেছে। ফিয়ার্স লেন, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, সেন্ট্রাল এভিনিউ, নর্থ পোর্ট থানা লাগোয়া এলাকা-সহ বেশ কিছু জায়গা জলমগ্ন। কাঁকুড়গাছি, পাতিপুকুর এবং উল্টোডাঙা আন্ডারপাসেও জল জমেছে। কোথাও কোথাও গোড়ালি অবধি, তো কোথাও হাঁটুর কাছাকাছি পর্যন্ত জল জমতে শুরু করেছে বলে কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর।

এদিকে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ গঙ্গায় জোয়ারের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সময় শহরের নিকাশি ব্যবস্থার লকগেটগুলি বন্ধ রাখা হবে, যাতে গঙ্গার জল প্রবেশ না করতে পারে। এর ফলে বৃষ্টির জল বেরোতে সময় লাগতে পারে আরও বেশি, এমনটাই জানিয়েছে কলকাতা পুরসভা সূত্র। ফলে জল জমার সমস্যা আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা।

রেলপথেও দুর্ভোগ কম নয়। শিয়ালদহ উত্তর ও দক্ষিণ শাখার বহু রেললাইন প্লাবিত হয়ে পড়েছে, যার ফলে সকাল থেকে ট্রেন চলাচলে দেখা দিয়েছে মারাত্মক বিঘ্ন। বারাকপুর, টিটাগড়, ডায়মন্ড হারবার ও ক্যানিং লাইনে ট্রেন চলছে অত্যন্ত ধীর গতিতে, যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতির প্রতি কড়া নজর রাখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের মতে, নিম্নচাপের কারণেই এত পরিমাণ দুর্যোগ দেখা দিয়েছে। আবহাওয়াবিদদের ইঙ্গিত, আজ দিনভর এমন ভারী বৃষ্টির পরিস্থিতি বজায় থাকবে। বুধবার পর্যন্ত এরকম আবহাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, পরে ধীরে ধীরে নিম্নচাপের প্রভাব হ্রাস পাওয়ার আশায় রয়েছে হাওয়া অফিস।

তবে আশার খবর, নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে ঝাড়খণ্ডের দিকে সরে যাচ্ছে, যার ফলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে।