ডিজিটাল ডেস্ক, ১৮ মে : সোমবার সকালে কলকাতা থেকে বাগডোগরা পৌঁছে তিন দিনের কর্মসূচি শুরু করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee North Bengal Tour)। প্রশাসনিক লক্ষ্যেই এই সফর হলেও, রাজনৈতিক দিক থেকেও তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গত কয়েক বছরে উত্তরবঙ্গের আটটি জেলায় তৃণমূলের জনসমর্থন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও গত লোকসভা নির্বাচনে শুধুমাত্র কোচবিহার আসনেই জয় পেয়েছিল তৃণমূল, তবে এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে উপনির্বাচনে সাফল্য ও সংগঠন বিস্তারের কাজ দ্রুত এগিয়েছে। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের তৃণমূলে যোগদানের পর উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক সমীকরণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। উন্নয়নমুখী প্রকল্প ও জনকল্যাণমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে শাসকদল অঞ্চলে তাদের প্রভাব বাড়িয়েছে, যার ফলে পদ্মশিবির কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে এসে আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রাক্তন রাষ্ট্রমন্ত্রী জন বার্লার তৃণমূলে যোগদান এই সফরকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
সোমবার বিকেলে শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে উত্তরবঙ্গের শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বছরের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে উত্তরবঙ্গের পর্যটন, হস্তশিল্প ও ক্ষুদ্র শিল্পের সম্ভাবনাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্য সরকার প্রথমবার উত্তরবঙ্গে ‘সিনার্জি’ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এই বৈঠকে শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী, তাঁদের পরামর্শ ও সমস্যাগুলি শুনবেন এবং আগামী দিনের পরিকল্পনার রূপরেখা উপস্থাপন করবেন।
মঙ্গলবার ডাবগ্রামের ভিডিওকন গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হবে পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান, যেখানে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দাদের হাতে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা তুলে দেওয়া হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী কয়েক হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। প্রথমে অনুষ্ঠানটি ওদলাবাড়িতে আয়োজনের পরিকল্পনা থাকলেও পরে তা ভিডিওকন গ্রাউন্ডে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
সফরের শেষ দিন, বুধবার, মুখ্যমন্ত্রী উত্তরকন্যা অডিটোরিয়ামে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। এই বৈঠকে রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রীরা, জেলাশাসক এবং প্রশাসনিক পদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত থাকবেন। এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী নিয়মিত উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখেন এবং উন্নয়নের গতিকে এগিয়ে রাখতেই এই সফর করছেন। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের এক বছরও বাকি নেই, তাই এই সফরে উত্তরবঙ্গের জন্য বেশ কিছু ঘোষণা করে জনসমর্থন বাড়ানোর লক্ষ্য থাকতে পারে।
Comments are closed.