Mamata Banerjee North Bengal Tour : উত্তরবঙ্গ সফরে একাধিক পুরসভাকে ‘ধমক’ মুখ্যমন্ত্রীর

9

ডিজিটাল ডেস্ক, ১৯ মে : সরকারকে না জানিয়ে ট্রেড লাইসেন্স ফি বাড়ানো, আবার কোথাও মিউটেশনের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ—এইসব অভিযোগ উঠে আসে সোমবার উত্তরবঙ্গের শিল্প সম্মেলনে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শিল্পমহল তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে। অভিযোগ শোনার পর স্থানীয় নেতৃত্বকে কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “এসব আর চলবে না।” পাশাপাশি, নিচুতলার কর্মীদের টাকা তোলা নিয়েও প্রশাসনকে সতর্ক করেন তিনি।

এদিন শিলিগুড়িতে আয়োজিত হয়েছিল ‘নর্থবেঙ্গল বিজনেস মিট–২০২৫’। সেই মঞ্চেই কোচবিহার ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে সুরজকুমার ঘোষ অভিযোগ করেন, গত তিন বছরে কোচবিহার জেলায় ট্রেড লাইসেন্স ফি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, যা উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেকটাই বেশি। একইসঙ্গে তিনি মিউটেশন ফি ও কনজারভেশন ফি বৃদ্ধির বিষয়েও অভিযোগ তোলেন (Mamata Banerjee North Bengal Tour)।

তার অভিযোগ শোনামাত্রই দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট জানান, এই ফি বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। সঙ্গে সঙ্গেই মুখ্যসচিবকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন এবং সংশ্লিষ্ট ফাইল পাঠানোর নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেন এমন হচ্ছে? আমি তো কখনও ফি বাড়াই না। এমনকি জলের উপরেও কর বাড়াতে দিই না। এটা একেবারেই উচিত নয়।”

শুধু কোচবিহার নয়, অন্যায্য ফি আদায়ের অভিযোগ উঠে আসে ডালখোলার ব্যবসায়ীদের তরফ থেকেও। তাঁদের অভিযোগ, অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার পরও পুরসভার পক্ষ থেকে ডেভেলপমেন্ট ফি দাবি করা হচ্ছে। বিষয়টি শুনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া প্রতিক্রিয়া দেন। তিনি বলেন, “এটা চলবে না, সবাইকে জানিয়ে দাও। ওদের এই টাকা নেওয়ার কোনও অধিকার নেই। মুখ্যসচিব বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।”

এরপর তিনি মন্তব্য করেন, “সব জায়গাতেই কিছু লোকজন একটু বেশি পাওয়ারফুল হয়ে ওঠে।” মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে অডিটোরিয়ামে উপস্থিতরা হাততালিতে ফেটে পড়েন। তিনি আরও বলেন, “ওরা নিজেকে খুব বড় মনে করে। একটা প্রবাদ আছে না—বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়! আর কিছু বললাম না। নিজেদের রোজগারের জন্য এসব করছে ওরা। কিন্তু আমরা এর কোনওটাই সমর্থন করি না। আমি মুখ্যসচিবকে বলব, এই নিয়ে একটা স্পষ্ট গাইডলাইন তৈরি করে দিতে।”

নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের টাকা তোলা নিয়েও এদিন সতর্ক বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর দিনাজপুরের এক ব্যবসায়ী, শংকর কুন্ডু অভিযোগ করেন, “শিল্পপতিদের গাড়ি যখন রাস্তায় চলে, তখন টোল ট্যাক্স, জিএসটি এবং পুলিশের হয়রানির কারণে কস্টিং অনেক বেড়ে যায়। এটা এখন দেশজুড়ে আমাদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি গাড়ি ভাড়াও অনেক বেড়ে গেছে।” তাঁর অভিযোগ শেষ হওয়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন, “টোল ট্যাক্স আর জিএসটি—সবই কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় পড়ে। এখন তো একটাই ট্যাক্স ব্যবস্থা। আগে রাজ্যও কিছু ট্যাক্স নিত, কিন্তু এখন রাজ্যের কিছু করার নেই। তবে আমরা কেন্দ্রের কাছে একটি অনুরোধ জানাতে পারি।” পরে তিনি সংযোজন করেন, “তবে পুলিশের যেন কোনও ধরনের ট্যাক্স আদায়ের সঙ্গে যুক্ত না থাকে, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুলিশেরই।”

Comments are closed.