Mamata Banerjee On 21 July : কেন ধর্মতলায় শহিদ দিবস? ইতিহাস স্মরণ মমতার, নবান্ন অভিযান নিয়ে কটাক্ষের সুরও শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর মুখে
ডিজিটাল ডেস্ক, ২০ জুলাই : আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। রাত পোহালেই তৃণমূলের শহিদ দিবস—২১ জুলাই। তার আগেই রবিবার সন্ধ্যায় ধর্মতলার সভামঞ্চে উঠে আবেগঘন বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee On 21 July)। মনে করালেন ১৯৯৩ সালের সেই রক্তাক্ত ২১ জুলাইয়ের ভয়াবহ স্মৃতি। কেন প্রতিবছর ধর্মতলার এই জায়গাতেই শহিদ দিবস পালন করা হয়, তা আরও একবার ব্যাখ্যা করেন মমতা। বলেন, “এই ধর্মতলাতেই শহিদ হয়েছিল আমার ভাইয়ের মতো ১৩ জন তরুণ। তাঁদের রক্ত মিশে আছে এই মাটিতে। তাই শহিদ দিবসের আসল মানে এখানেই।”
সিপিএম আমলে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের কথা তুলে ধরে রবিবার সন্ধ্যায় শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সেই সময় মানুষকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেওয়া হত না। আমরা তখন সচিত্র পরিচয়পত্র চালুর দাবিতে আন্দোলন শুরু করি। সিপিএম তা থামাতে পারেনি, বরং গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করতে গুলি চালায়। তাতে ১৩ জন শহিদ হন, আহত হন আরও ১৫০ জন।” এরপর আবেগঘন কণ্ঠে মমতা বলেন, “গত ৩৩ বছর ধরে আমি এই ধর্মতলার মাটিতেই শহিদ দিবসের কর্মসূচি করি। কারণ এখানেই অনেক তাজা প্রাণ রক্তে ভিজে গিয়েছিল, এখানেই বয়ে গিয়েছিল রক্তের নদী।” ২১ জুলাই ধর্মতলায় পালন নিয়ে যাঁরা আপত্তি তোলেন, তাদেরও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, “আমাদের এই প্রোগ্রাম নিয়ে অনেকেই আপত্তি তোলে। কিন্তু তারা যখন রাস্তায় জমায়েত করে, তখন কি পুলিশের অনুমতি নেয়? অনুমতি না পেলেও তো তারা মিছিল করে!” তারপর সোজাসাপ্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন মমতা— “আমরা কি তোমাদের মতো প্যারালাল প্রোগ্রাম করি?” তাঁর কথায়, শহিদ দিবস শুধুই রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটা ত্যাগ, লড়াই আর আত্মবলিদানের প্রতীক।
সিপিএম শাসনকালে সাধারণ মানুষের উপর হওয়া দমন-পীড়নের কথা স্মরণ করে শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে রবিবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সেই সময় ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেওয়া হত না। আমরা তখন সচিত্র পরিচয়পত্র চালুর দাবিতে আন্দোলনে নামি। সিপিএম তা দমাতে পারেনি। বরং গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করতে গুলি চালায়। তাতে প্রাণ হারান ১৩ জন, আহত হন অন্তত ১৫০ জন।” আবেগঘন সুরে মমতা আরও বলেন, “গত ৩৩ বছর ধরে আমি এই ধর্মতলার মাটিতেই শহিদ দিবসের কর্মসূচি করে আসছি। কারণ, এখানেই বহু তাজা প্রাণ রক্তে ভিজেছিল। এখানেই বয়ে গিয়েছিল রক্তের স্রোত।” ২১ জুলাই ধর্মতলায় পালন নিয়ে যাঁরা আপত্তি তোলেন, তাঁদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, “আমাদের কর্মসূচি নিয়ে অনেকের আপত্তি আছে। কিন্তু ওরা নিজেরা যখন জমায়েত করে, তখন কি পুলিশি অনুমতি নেয়? বরং অনুমতি না পেয়েও রাস্তায় নেমে পড়ে।” এরপর প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি— “আমরা কি তোমাদের মতো প্যারালাল প্রোগ্রাম করি?” মমতার সাফ কথা, শহিদ দিবস শুধুমাত্র রাজনৈতিক জমায়েত নয়, এটি এক ঐতিহাসিক স্মরণদিবস—ত্যাগ, সংগ্রাম আর আত্মবলিদানের প্রতীক।
২১ জুলাইয়ের প্রাক্কালে সভামঞ্চ পরিদর্শনে গিয়ে কড়া সুরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করলেন, “পুলিশের অনুমতি না নিয়েই যখন নবান্ন অভিযানের মতো কর্মসূচি হয়, তখন তো কারও কোনও আপত্তি থাকে না!’’তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভামঞ্চ পরিদর্শনে গিয়ে কটাক্ষের সুরে বলেন, “আমাদের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে অনেকের আপত্তি রয়েছে। কিন্তু ওরা যখন পুলিশের অনুমতি ছাড়া নবান্ন অভিযানের মতো কর্মসূচি করে, তখন তো কোনও প্রশ্ন ওঠে না! আমাদের দেখে ওদের কর্মসূচি করতে হয়—কিন্তু আমরা কি ওদের দেখে কিছু করি? বরং তৃণমূলের কাছ থেকেই শিক্ষা নেওয়া উচিত।”
২১ জুলাইয়ের সভা ঘিরে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি গৌরাঙ্গ ঘোষের পর্যবেক্ষণ নিয়ে এবার প্রতিক্রিয়া জানালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিচারপতিরা পর্যবেক্ষণ দিতে পারেন, সেটা তাঁদের অধিকার। কিন্তু শহিদ দিবস ধর্মতলাতেই হয়, কারণ এখানেই আমাদের সহকর্মীরা শহিদ হয়েছিলেন। এটা আবেগ, ইতিহাস, লড়াইয়ের প্রতীক। অন্য কোথাও সভা করার কথা ভাবার প্রশ্নই নেই।” তবে মমতা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আদালতের পর্যবেক্ষণ তিনি সম্মান করেন, কিন্তু শহিদ দিবসের ঐতিহ্য তিনি ধরে রাখতে চান।