Mamata Banerjee on New Govt Project : ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’, ছাব্বিশের ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রীর নয়া প্রকল্প!
ডিজিটাল ডেস্ক, ২২ জুলাই : ২১ জুলাই ধর্মতলার মঞ্চ থেকে দলীয় স্তরে নির্বাচনের সুর বেঁধে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার পরদিন, মঙ্গলবার নবান্নে বসেই ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে একটি নতুন সরকারি প্রকল্পের ঘোষণা করলেন তিনি। সরকারি পরিষেবা আরও বেশি করে তৃণমূল স্তরে ও প্রান্তিক জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে চালু করা হচ্ছে নতুন প্রকল্প— ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ (Mamata Banerjee on New Govt Project)।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বিস্তারিতভাবে জানান, এই প্রকল্পের আওতায় কী ধরনের পরিষেবা মিলবে, তা কোথায়, কবে ও কতদিন ধরে পাওয়া যাবে—সব কিছুই নির্দিষ্টভাবে পরিকল্পিত। এই উদ্যোগে মূল লক্ষ্য, মানুষের দরজায় পৌঁছে দেওয়া সরকারি সহায়তা।
আগামী ২ অগস্ট থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হতে চলেছে ‘আমার পাড়া, আমার সমাধান’ প্রকল্পের কাজ। এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন এই কর্মসূচির রূপরেখাও এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, প্রতি তিনটি বুথ মিলিয়ে একটি সেন্টার গঠন করা হবে। প্রতিটি পাড়ায় এক দিন করে ক্যাম্প হবে, যেখানে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন। উঠে আসা সমস্যাগুলোর সমাধানের প্রক্রিয়াও হবে দ্রুত এবং সম্পূর্ণ অনলাইন মাধ্যমে, স্বচ্ছতা বজায় রেখে। মমতা বলেন, “মানুষ নিজের সমস্যা নিজেই জানাতে পারবেন। সরকার সেটা শুনবে এবং সমাধানের উদ্যোগ নেবে।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, গ্রামে মানুষের ছোট ছোট সমস্যার কথা সরাসরি শুনবেন সরকারের আধিকারিকরা। এমন সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধানে প্রতিটি প্রকল্পের জন্য সরকার ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থ বরাদ্দ করবে।‘ছোট কাজ’ বলতে কী বোঝানো হচ্ছে, তাও স্পষ্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কোনও পাড়ায় একটা পানীয় জলের কল দরকার, বা কোথাও অল্প কিছু রাস্তার কাজ বাকি—এই ধরনের ছোট সমস্যাগুলির কথা মানুষ সরাসরি ক্যাম্পে এসে জানাতে পারবেন।” এরপর সেই অভিযোগ বা অনুরোধগুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা আলোচনা করে ঠিক করবেন কীভাবে তা বাস্তবায়ন করা যায়। উদ্দেশ্য, স্থানীয় স্তরে দ্রুত এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সমাধান নিশ্চিত করা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় জানালেন, “সরকারি পরিষেবা এখন পৌঁছে যাবে একেবারে তৃণমূল স্তরে, মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। যেমন গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদের মাধ্যমে কাজ হয়, তেমনই চলবে এই নতুন উদ্যোগও। তবে অনেক সময় এমন ছোট ছোট সমস্যা থাকে, যা ওই কাঠামোর মধ্যে পড়ে না। সেই সমস্যাগুলোরই সমাধান হবে এই ‘‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’’ প্রকল্পের মাধ্যমে।”তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “আপনার গ্রামের আইসিডিএস সেন্টারে যদি পাঁচিল দরকার হয়, বা ছাদ কিংবা ঘর তৈরির প্রয়োজন হয়—সেই কাজগুলোও এই প্রকল্পের আওতায় পড়বে। ছোট স্তরে, কিন্তু মানুষের প্রয়োজনীয়তা মেটাতেই হবে এই প্রকল্পের লক্ষ্য।”
এই নতুন প্রকল্প ঘোষণার মধ্যেই রাজনৈতিক বার্তা স্পষ্ট—২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল সরকার। এর আগেও প্রতিটি নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী কোনও না কোনও জনমুখী প্রকল্প চালু করেছেন—কখনও ‘দিদিকে বলো’, কখনও ‘দুয়ারে সরকার’, আবার কখনও ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো ‘আমার পাড়া, আমার সমাধান’। অর্থাৎ, সরাসরি জনতার সমস্যার সমাধানের মাধ্যমেই জনসমর্থন নিশ্চিত করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।