ডিজিটাল ডেস্ক, ১৬ জুলাই : ভিন রাজ্যে বাংলাভাষী বাসিন্দাদের উপর হেনস্তার প্রতিবাদে ধর্মতলায় রাস্তায় নামলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকাশ্য জনসভা থেকে বিজেপিকে তীব্র হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এদিন মমতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ভাষা, সংস্কৃতি, এমনকি খাদ্যাভ্যাসেও হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। কে কী খাবে, তাও কি আপনারা ঠিক করবেন? যা খুশি বলে যাচ্ছে, যা খুশি করে যাচ্ছে বিজেপি।” তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল—এ ধরনের জবরদস্তির বিরুদ্ধে তৃণমূলের লড়াই আরও তীব্র হবে (Mamata on Food Habit)।
ধর্মতলার জনসভা থেকে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “একটুও লজ্জা নেই! কে শিঙাড়া খাবে, কে সামোসা খাবে, কে জিলিপি, পোহা, হালুয়া কিংবা অমৃতি খাবে—সব কিছুতেই নাক গলাচ্ছে। যেন নাক গলানোর ওস্তাদ হয়ে উঠেছে সবাই। বড় নেতাদের চেয়ে ছোট নেতারাই এখন বেশি চিৎকার করছে। যা খুশি বলছে, যা খুশি করছে—কোনও জবাবদিহি নেই।” মমতার বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল, মানুষের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ নিয়েও যেভাবে রাজনীতি করা হচ্ছে, তা নিয়ে তাঁর প্রবল আপত্তি রয়েছে।
মঙ্গলবার একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সমস্ত কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জিলিপি, শিঙাড়া প্রভৃতি অস্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সতর্ক করতে হবে। নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে—এই ধরনের খাবারে কত পরিমাণ ক্যালোরি, চিনি ও ট্রান্স-ফ্যাট রয়েছে, তা জানানো বাধ্যতামূলক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যান্টিনে এ বিষয়ে সচেতনতামূলক পোস্টার টাঙানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তবে এই খাবার বিক্রির উপর কোনও সরাসরি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি।
মঙ্গলবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স (প্রাক্তন টুইটার)-এ এক পোস্টে কেন্দ্রীয় নির্দেশিকাকে ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি লেখেন, “কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে, স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশে এখন থেকে নাকি শিঙাড়া-জিলিপি খাওয়া যাবে না। এটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোনও বিজ্ঞপ্তি নয়। আমরা সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না, এবং এই নির্দেশিকা কার্যকরও করব না।” কেন্দ্রের উদ্দেশে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, শিঙাড়া ও জিলিপি অন্যান্য রাজ্যেও সমান জনপ্রিয়। সেখানকার মানুষও এই খাবার ভালোবাসেন। মানুষের খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ করা মোটেই ঠিক নয়।”
এরপর বুধবার ধর্মতলার জনসভা থেকেও একই সুরে কেন্দ্রকে বিঁধেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্যে মানুষের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দে সরকারের অনধিকার হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা ছিল। তবে এ নিয়ে পরে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ফ্যাক্ট চেক করে জানানো হয়, জিলিপি বা শিঙাড়া নিষিদ্ধ করার কোনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি। বরং স্বাস্থ্যের দিক থেকে সতর্কতা বজায় রাখতে কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল মাত্র।