Mao Encounter Basav Raju Death : যৌথবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে খতম ৩০ মাওবাদী, খতম মাওবাদী প্রধান বাসবরাজু

10

ডিজিটাল ডেস্ক, ২১ মে : নিরাপত্তাবাহিনীর মাও-বিরোধী অভিযানে বড় সাফল্য। ছত্তিশগড়ের বস্তারে সংঘর্ষে নিহত হল মাওবাদী সংগঠনের শীর্ষ নেতা ও প্রধান কমান্ডার বাসবরাজু। ৭০-এর দশক থেকে দেশজুড়ে মাওবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিল এই ‘লাল সন্ত্রাসী’। দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তাবাহিনীর মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় ছিল সে। তার মাথার দাম ছিল ১.৫ কোটি টাকা। বহু অভিযানের পর অবশেষে বাসবরাজুকে খতম করল বাহিনী। একে মাওবাদী দমনে বড় ধাক্কা বলেই মনে করছে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা মহল (Mao Encounter Basav Raju Death)।

ছত্তিশগড়ের বস্তারে মাওবাদীদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলির লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত ২৬ জন নিহত হওয়ার খবর সামনে এসেছে। নিরাপত্তা সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার গোপন খবরের ভিত্তিতে অবুজমাঢ় এলাকায় অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। খবর ছিল, ওই জঙ্গলে লুকিয়ে রয়েছে এক শীর্ষ মাওবাদী কমান্ডার। সেই অনুযায়ী এলাকা ঘিরে শুরু হয় তল্লাশি। এসময় পালানোর পথ না পেয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর উপর আচমকা গুলি চালায় মাওবাদীরা। জবাবে পাল্টা গুলিবর্ষণ করে বাহিনী। এই সংঘর্ষেই মৃত্যু হয় একাধিক মাওবাদীর, যার মধ্যে রয়েছে সংগঠনের শীর্ষ নেতা নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু। নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, এখনো গোটা এলাকায় তল্লাশি অভিযান চলছে। মাওবাদী দমনে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে মাওবাদীদের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মুপাল্লা লক্ষ্মণ রাও ওরফে গণপতি অসুস্থ হয়ে পড়ায় সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয় বাসবরাজুকে। যদিও ২০১৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নেতৃত্ব বদলের কথা ঘোষণা করে মাওবাদীরা। বাসবরাজু ছিল মাওবাদীদের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের প্রধান এবং তার নেতৃত্বেই গত দেড় দশক ধরে নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিক বড়সড় অপারেশন চালানো হয়েছে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫৫ সালের ১০ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলামে জন্মগ্রহণ করে বাসবরাজু। শিক্ষাক্ষেত্রে যেমন মেধাবী ছিল, তেমনই খেলাধুলাতেও পারদর্শী ছিল সে। অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য ভলিবল দলের ক্যাপ্টেনও ছিল বাসবরাজু। তবে ছাত্রাবস্থাতেই বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। ১৯৮০ সালে এবিভিপির এক সদস্যের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে গ্রেপ্তার হয় এবং এরপর থেকেই সরাসরি মাওবাদী আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে ওঠে। প্রায় ৩৫ বছর ধরে সংগঠনের বিভিন্ন শীর্ষ দায়িত্ব সামলেছে বাসবরাজু।

পুলিশের দাবি, বাসবরাজুর নেতৃত্বেই ছত্তিশগড়ের বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে মাওবাদীরা। তার পরিকল্পনায় যেসব বড়সড় হামলা হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল—

২০১৮ সালে সুকমায় আইইডি বিস্ফোরণ, যেখানে মৃত্যু হয় ৯ জন সিআরপিএফ জওয়ানের।

২০১৯ সালে মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলিতে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ, তাতে প্রাণ হারান ১৫ জন পুলিশকর্মী।

২০২১ সালে সুকমা-বিজাপুর সীমান্তে ভয়াবহ গুলির লড়াই, যেখানে নিহত হন ২২ জন নিরাপত্তাকর্মী।

২০২৩ সালে দান্তেওয়াড়ায় বিস্ফোরণ, মৃত্যু হয় ১০ জন জওয়ান ও এক সাধারণ নাগরিকের।

২০২৫ সালে বিজাপুরে বিস্ফোরণ, তাতে প্রাণ হারান ৮ জন জওয়ান।

এই সমস্ত হামলার নেপথ্যে ছিল বাসবরাজুর কৌশল ও নেতৃত্ব, এমনটাই দাবি করছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।

Comments are closed.