Nationalized Bank Loan : দশ বছরে ১২ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি

13

ডিজিটাল ডেস্ক, ২৩ জুলাই : গত দশ বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি মিলে ১২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ঋণ বাতিল করেছে। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক প্রশ্নের উত্তরে এই তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। এই বিপুল ঋণ মকুবকে ঘিরে শুরু হয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে রাজনৈতিক তরজা (Nationalized Bank Loan)।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষ থেকে ২০২৪-২৫ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি মোট ১২,০৮,৮২৮ কোটি টাকার ঋণ বাতিল করেছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্ট করেছে, ঋণ মকুব মানে এই নয় যে, ঋণগ্রহীতারা দায়মুক্ত হয়ে গিয়েছেন। অর্থ আদায়ের প্রক্রিয়া এখনও জারি রয়েছে।

অর্থ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি মিলিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ বাতিল করেছে দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (SBI)। শুধুমাত্র এই ব্যাঙ্কই গত পাঁচ বছরে ১ লক্ষ ১৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ বাতিল করেছে। চলতি অর্থবর্ষ ২০২৪-২৫-এ এখনও পর্যন্ত মকুব হয়েছে প্রায় ২০,৩০০ কোটি টাকার ঋণ। তবে এই অঙ্ক সংক্রান্ত কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

ঋণ মকুবের তালিকায় স্টেট ব্যাঙ্কের পরেই রয়েছে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (৮১,২৪৩ কোটি টাকা), ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (৮৫,৫৪০ কোটি টাকা), ব্যাঙ্ক অফ বরোডা (৭০,০৬১ কোটি টাকা), এবং ক্যানারা ব্যাঙ্ক। ক্যানারা ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে ঋণ মকুবের পরিমাণ ২০২১-২২ অর্থবর্ষে যেখানে ছিল ৮,৪২২ কোটি টাকা, তা ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪,৩৫০ কোটি টাকায়।

এই বিপুল ঋণ মকুবের ঘটনা ঘিরে বিরোধী রাজনৈতিক শিবির বারবার প্রশ্ন তুলেছে। তাঁদের অভিযোগ, মোদী সরকার সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দ প্রকল্পগুলির টাকা আটকে রেখে কর্পোরেট বন্ধুদের স্বার্থ রক্ষায় বিপুল অঙ্কের ঋণ মাফ করছে। যেমন, পশ্চিমবঙ্গের ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনার টাকা এখনও আটকে রয়েছে, অথচ লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ বাতিল হচ্ছে—এই বৈষম্যমূলক আচরণের তীব্র নিন্দা করেছে রাজ্যের সরকার।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা এবং ঋণ পুনরুদ্ধারের কাঠামো কতটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি যেহেতু জনগণের টাকায় পরিচালিত হয়, সেই কারণে এমন বিপুল পরিমাণ ঋণ মকুব আসলে ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক চাপ এবং কাঠামোগত দুর্বলতারই প্রতিফলন।