প্রস্তুত জঙ্গি সহযোগী স্থানীয় ২০ জনের তালিকা!

11

ডিজিটাল ডেস্ক, ২ মে: পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলায় স্থানীয়দের ভূমিকা ছিল বলেই মনে করছেন এনআইএ-র আধিকারিকরা। শুধু পহেলগাঁও নয়, রাজৌরি পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকাজুড়েই বহু মানুষের এই হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার সন্দেহ করা হচ্ছে।

হামলার পরপরই প্রায় ১০০ জন স্থানীয় বাসিন্দাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে তদন্তকারীরা। এনআইএ সূত্রে খবর, তাঁদের মধ্যে থেকে ২০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে, যাঁরা ‘ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার’ হিসেবে জঙ্গিদের সহায়তা করতেন বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হয়েছে। সূত্র জানাচ্ছে, খুব শীঘ্রই তাঁদের বিস্তারিতভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

সূত্রের খবর, জম্মুর কোট ভলওয়াল জেলে বন্দি লশকর জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত দুই ‘ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার’ নিসার আহমেদ ওরফে হাজি এবং মুস্তাক হুসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে এনআইএ। ২০২৩ সালে ভাটা ধুরিয়া এবং তোতাগলিতে সেনার কনভয়ে জঙ্গি হামলায় মদত দেওয়ার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। তদন্তকারীদের আশঙ্কা, রাজৌরি, পুঞ্চ এবং পহেলগাঁও হামলার মধ্যে কোনও সংযোগ থাকতে পারে। এনআইএ-র অনুমান, ওই দুই ব্যক্তির মাধ্যমে এই হামলাগুলির মধ্যে থাকা জঙ্গিদের চলাচল বা পরিকল্পনার সূত্র খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে, পহেলগাঁওয়ের হত্যালীলা চালানো জঙ্গিরা পূর্বের হামলাগুলিতেও জড়িত ছিল কি না, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্তকারীদের ধারণা, পহেলগাঁও হামলার জঙ্গিরা বিগত ১০ দিন ধরে পাহাড়ি গুহায় আত্মগোপন করে রয়েছে। তবে এতদিন ধরে দুর্গম বনাঞ্চল ও গুহায় লুকিয়ে থাকার জন্য যে পরিমাণ রসদ প্রয়োজন, তা কে বা কারা জোগাচ্ছে, তা জানতে সন্দেহভাজন ‘ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার’দের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। জঙ্গিদের খোঁজে বৈসরন, তারুন হপন্তগুন্ড, ডাবরু ও আশেপাশের এলাকায় জোরদার চিরুনি তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই অঞ্চলগুলোর মধ্যেই হামলাকারীরা লুকিয়ে থাকতে পারে। এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈসরন উপত্যকা ও তার আশপাশের ২০ কিলোমিটার জুড়ে কতগুলি মোবাইল টাওয়ার রয়েছে এবং ২০ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত সেই টাওয়ারগুলোর মাধ্যমে কী পরিমাণ ফোন কল হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে—জঙ্গিদের অবস্থান চিহ্নিত করার জন্য।

এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, হামলার ঠিক আগে বৈসরন এলাকায় দু’টি আল্ট্রা স্টেট সিগন্যাল সক্রিয় ছিল। এই বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনও সিমকার্ড ছাড়াই মোবাইল ডিভাইসে অডিও কল, ভিডিও ট্রান্সমিশন এবং এসএমএস পাঠানো সম্ভব। তদন্তকারীদের সন্দেহ, এই সিগন্যাল ব্যবস্থার সাহায্যেই জঙ্গিরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করছিল। এই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নজরদারির চোখ এড়িয়ে কার্যত নিরবিচারে যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়াই ছিল তাদের লক্ষ্য বলে মনে করা হচ্ছে।

Comments are closed.