Operation Sindoor Kartarpur Corridor : অপারেশন সিঁদুর-এর আবহে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্তারপুর করিডোর বন্ধ করল ভারত

10

ডিজিটাল ডেস্ক, ৭ মে: অপারেশন সিঁদুরের পর ভারত অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্তারপুর করিডর বন্ধ ঘোষণা করেছে। বুধবার সেখানে যাওয়া ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনস্থ দ্য ব্যুরো অফ ইমিগ্রেশন একটি বিবৃতি প্রকাশ করে, যেখানে জানানো হয় যে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কর্তারপুর করিডোর বন্ধ থাকবে (Operation Sindoor Kartarpur Corridor)।

ভারতের সিনিয়র পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট সোহেল কাশিম মীর জানিয়েছেন, বুধবার কর্তারপুর গুরুদ্বারে যাওয়ার জন্য ৫০০ জন তীর্থযাত্রী নিবন্ধন করেছিলেন। সকালে প্রায় ১০০ জন সেখানে উপস্থিত হন। কিন্তু করিডোর বন্ধ থাকায় তাঁদের ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে, কর্তারপুর করিডোর বন্ধের কারণ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

কর্তারপুর গুরুদ্বার শিখ ধর্মাবলীদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র একটি তীর্থস্থান। গুরু নানক, শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা, তাঁর জীবনের শেষ ১৮ বছর এখানেই কাটিয়েছিলেন। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর কর্তারপুর পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে পড়ে যায়, ফলে ভারতের শিখ সম্প্রদায়ের জন্য সেখানে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, যেন সহজে এই পবিত্র স্থানে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়।

এই দাবির প্রেক্ষিতে, ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে ভারত ও পাকিস্তান সরকার কর্তারপুর করিডোর চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির মাধ্যমে, ভারতীয় শিখ তীর্থযাত্রীরা মাত্র ৪ কিলোমিটার রাস্তা পার করে কর্তারপুরে অবস্থিত গুরুদ্বার দারবার সাহিবে পৌঁছাতে পারেন। এই যাত্রার জন্য ভিসার প্রয়োজন হয় না; তবে, যাত্রীরা একটি অনলাইন নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনুমতি গ্রহণ করেন।

প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৫,০০০ জন ভারতীয় নাগরিক এই করিডোর ব্যবহার করে কর্তারপুর গুরুদ্বারে যেতে পারেন। বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উৎসবের সময় এই সংখ্যা ১০,০০০ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এটি শিখ ধর্মাবলীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা দুই দেশের মধ্যে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।

প্রসঙ্গত পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে ভারতীয় সেনা মঙ্গলবার গভীর রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায়। পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি স্থানে জঙ্গিঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়, যেখানে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বাহওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদ, মুরাক্কায় লস্কর-ই-তৈবা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের সদর দপ্তর ধ্বংস করা হয় বলে খবর পাওয়া গেছে। এই অভিযানের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাতেই মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, যেখানে জানানো হয় যে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরে ৯টি স্থানে জঙ্গি পরিকাঠামোকে লক্ষ্য করে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ চালানো হয়েছে। যে সব জায়গা থেকে ভারতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের পরিকল্পনা ও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেখানেই ভারত সরাসরি আঘাত হেনেছে।

Comments are closed.