ডিজিটাল ডেস্ক, ৩০ এপ্রিল: জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর তীব্র উত্তেজনার আবহে আতঙ্কে কাঁপছে পাকিস্তান। ইতিমধ্যেই মোদি সরকার ভারতীয় সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাত ২টো নাগাদ বড়সড় সতর্কবার্তা দেন পাকিস্তানের সম্প্রচারমন্ত্রী আতাউল্লা তারার। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি দাবি করেন, আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের তরফে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় সেনা অভিযান শুরু হতে পারে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে এক ভিডিওবার্তায় পাকিস্তানের সম্প্রচারমন্ত্রী আতাউল্লা তারার জানান, ‘‘বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়েছি, পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার দায় পাকিস্তানের উপর চাপিয়ে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ভারত বড়সড় সামরিক অভিযান চালাতে পারে।’’
তিনি বলেন, ভারতের একতরফা পদক্ষেপের পালটা জবাব দেওয়ার জন্য পাকিস্তানও প্রস্তুত রয়েছে। তবে একইসঙ্গে সুর কিছুটা নরম করে পাক মন্ত্রী জানান, “পাকিস্তান নিজেই সন্ত্রাসবাদের শিকার, তাই আমরা এই যন্ত্রণা অনুভব করি। বিশ্বের যেকোনও প্রান্তে সন্ত্রাসবাদী হামলার নিন্দা জানাই। একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান ভারতের কাছে আহ্বান জানিয়েছে, পহেলগাঁও হামলার ঘটনায় নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে স্বচ্ছ তদন্ত করা হোক। তাঁর সতর্ক বার্তা, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভারত সংঘর্ষের পথ বেছে নিয়েছে, যার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।”
পাকিস্তানের সম্প্রচারমন্ত্রী আতাউল্লা তারার আরও অভিযোগ করেন, “শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণ করতেই ভারত এই ধরনের পদক্ষেপ নিতে চলেছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।” তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি ভারত কোনওরকম সামরিক অভিযান চালায়, তবে পাকিস্তান তার উপযুক্ত ও কঠোর জবাব দেবে।” পাশাপাশি, গোটা বিশ্বের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “এই হামলা হলে তার পরিণতির সম্পূর্ণ দায়ভার ভারতের উপরই থাকবে। পাকিস্তান নিজের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং প্রয়োজনে কঠিন পদক্ষেপ নিতে পিছপা হবে না।”
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। সাম্প্রতিক সময়ের এই ভয়াবহ হামলা ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং সীমান্ত সুরক্ষা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এই ঘটনায় সরাসরি পাকিস্তানের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে ভারত। সূত্র অনুযায়ী, হামলায় জড়িত চার জঙ্গির মধ্যে দু’জন পাকিস্তানের নাগরিক। প্রথমে হামলার দায় স্বীকার করলেও পরে তা অস্বীকার করে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন টিআরএফ (দ্য রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট)। এই ঘটনার জেরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। বৈঠকের পরই সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় ভারত সরকার।
Comments are closed.