Puri Jagannath Temple Copyright Claim : অন্যত্র পুজো, রীতিনীতির ‘কপিরাইট’ চায় পুরীর জগন্নাথ মন্দির!

18

ডিজিটাল ডেস্ক, ১৩ জুলাই : পুজোর রীতিনীতি এবার কপিরাইটের আওতায়! দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরে পূজা শুরু হওয়ার পর এবার নতুন পদক্ষেপ নিতে চলেছে পুরীর জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন পুরীর সম্মানীয় রাজা এবং জগন্নাথ মন্দিরের ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান গজপতি মহারাজ দিব্যসিংহ দেব। তিনি জানিয়েছেন, জগন্নাথ মন্দিরের ঐতিহ্যবাহী পূজাচার ও রীতিনীতির কপিরাইট নেওয়ার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে (Puri Jagannath Temple Copyright Claim)।

পুরীর জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের মূল আপত্তির তির এবার ইসকনের দিকে। তাঁদের অভিযোগ, ইসকন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং বিদেশে জগন্নাথ দেবের আরাধনা ও রথযাত্রা আয়োজন করছে, কিন্তু তা মন্দিরের নির্ধারিত রীতিনীতি বা নির্দিষ্ট দিনক্ষণ না মেনেই। পুরীতে যেভাবে নিয়ম মেনে রথযাত্রা, স্নানযাত্রার মতো অনুষ্ঠান পালিত হয়, তা অনুসরণ না করে ইসকন নিজেদের মতো করে ইচ্ছেমতো দিনে এই ধর্মীয় আয়োজন করছে। এতে জগন্নাথ ভক্তদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগছে বলে মনে করছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।

গজপতি মহারাজ দিব্যসিংহ দেব জানিয়েছেন, এ নিয়ে ইতিমধ্যেই মায়াপুরে অবস্থিত ইসকনের সদর দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং আলোচনা চলছে। একইসঙ্গে তিনি নিশ্চিত করেছেন, ওড়িশা সরকার পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ঐতিহ্যবাহী রীতি-রেওয়াজ এবং পূজাচারের কপিরাইট নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সরকারি সূত্রেও জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।

যদি ইসকন কোনও পুজোতে রীতির বিচ্যুতি ঘটিয়ে থাকে, তাহলে সংলাপের মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করা যেত। সরাসরি পুজোর রীতিনীতির ‘কপিরাইট’ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। তাছাড়া, ধর্মীয় আচারের ক্ষেত্রে রীতিনীতির ওপর কপিরাইট দাবি করা কি আদৌ যুক্তিযুক্ত? এমন কপিরাইটের অর্থই তো দাঁড়ায়, নির্দিষ্ট একটি পদ্ধতিতে পুজো করার অধিকার বিশ্বের অন্যান্য মানুষ হারিয়ে ফেলবেন, যা ধর্মাচরণ ও স্বাধীনতা চর্চার পরিপন্থী।

রাজ্যের শাসকদলের একাংশের ধারণা, পুরীর জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের ‘পুজোর রীতিনীতির কপিরাইট’ নেওয়ার ভাবনার পেছনে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের বাড়তে থাকা জনপ্রিয়তাও একটি কারণ হতে পারে। এর আগেও দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের নাম ‘জগন্নাথ ধাম’ রাখাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ওড়িশা সরকার সেই নামকরণে আপত্তি তোলে, এমনকি পুরীর গোবর্ধনপীঠের শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতীও বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই আপত্তি কার্যত গুরুত্ব পায়নি।