ডিজিটাল ডেস্ক, ২৩ মে : এপ্রিল ২৩ তারিখে ডিউটির সময় অসাবধানতাবশত সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সের হাতে আটক হয়েছিলেন হুগলি রিষড়ার বাসিন্দা বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। দীর্ঘ এক মাসের অপেক্ষার পর, অবশেষে আজ, মে ২৩, তিনি বাড়ি ফিরছেন (Purnam Shaw Returning Home)। শুক্রবার বিকেল ৫টার মধ্যে তাঁর প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। এই সুখবর শুনেই আনন্দের জোয়ার তাঁর পরিবার ও সমগ্র এলাকায়। বিশেষ করে তাঁর ছোট ছেলে, যে বাবার সঙ্গে খেলতে মুখিয়ে রয়েছে।
ভারতের তীব্র কূটনৈতিক চাপের মুখে ২২ দিন পর অবশেষে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। ১৪ মে ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরেন হুগলির জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। দেশে ফিরে ফোন ও ভিডিও কলের মাধ্যমে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি, তবে তখনই বাড়ি ফেরার অনুমতি মেলেনি। তাঁর শারীরিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পাকিস্তানে তাঁর সঙ্গে হওয়া যেকোনো সম্ভাব্য নির্যাতনের বিশ্লেষণ এবং মানসিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হয়। সমস্ত পর্যবেক্ষণ সম্পন্ন হওয়ার পর, দেশে ফেরার ৯ দিন পর আজ, তিনি অবশেষে নিজের বাড়ির পথে।
পূর্ণমকুমার সাউয়ের বাড়ি ফেরার খবর ছড়িয়ে পড়তেই রিষড়ার তাঁর বাসস্থান এলাকায় শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। যেন আগেভাগেই আনন্দে মাতোয়ারা সবাই! পরিবার-পরিজনের উচ্ছ্বাসে ভাসছে চারপাশ। স্ত্রী রজনী বলছেন, এখন শুধু অপেক্ষা স্বামীকে ঘরে ফিরে পাওয়ার। বাবা-মা ছেলের দ্রুত ঘরে ফেরার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন, তবে তাঁরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে পূর্ণম আবারও দেশরক্ষার কাজে ফিরে যাবেন। এখন পরিবারের সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, কখন ঘড়ির কাটা পাঁচটা ছোঁবে আর পূর্ণম ফিরে আসবেন।
পহেলগাঁও হামলার ঠিক পরদিন, ২৩ এপ্রিল, অসাবধানতাবশত সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিলেন হুগলির পূর্ণমকুমার সাউ, যার ফলে পাক সেনার হাতে বন্দি হন তিনি। উদ্বেগের মধ্যে স্বামীর সন্ধানে বিএসএফের হেড কোয়ার্টারে ছুটে গিয়েছিলেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী। আশ্বাস পেলেও তাঁর মনে আতঙ্ক কাটেনি। ৭ মে ভারতের “অপারেশন সিঁদুরে” পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গিঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর, রজনী কার্যত স্বামীকে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং চলছিল। অবশেষে, ১৪ মে অনুষ্ঠিত সেই বৈঠকে পাকিস্তান মাথা নত করতে বাধ্য হয় এবং পূর্ণমকুমারকে মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। তখনই জানা যায়, সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলে দ্রুত তাঁকে দেশে ফেরানো হবে। শুক্রবার অবশেষে বাড়ি ফিরছেন সেই সাহসী জওয়ান।
Comments are closed.