RG Kar Junior Doctors Protest : ‘নির্যাতনের বর্ষপূর্তি’ ৮ অগস্ট রাস্তায় রাত জাগার ডাক জুনিয়র ডাক্তারদের

10

ডিজিটাল ডেস্ক, ৮ জুলাই : গত বছরের ৮ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। সেই ঘটনার বর্ষপূর্তিতে প্রতিবাদের ডাক দিল ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট’ (RG Kar Junior Doctors Protest)। মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে তারা জানায়, ৮ অগস্ট রাত ১২টা থেকে পরদিন ভোর ৪টা পর্যন্ত চলবে তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি। থাকবে মশাল মিছিলও, যা শহরের বিভিন্ন অংশে সচেতনতা ছড়াবে বলে জানায় সংগঠনটি। এই প্রতিবাদ কর্মসূচির মাধ্যমে তারা নিরপেক্ষ তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবিতেও আওয়াজ তুলবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।

গত বছর ৮ অগস্ট রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গোটা দেশ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই বিভীষিকার এক বছর পূর্তিতে, ঠিক একই সময়ে—৮ অগস্ট রাত ১২টায়—শ্যামবাজারে প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছে ‘জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট’। সেখান থেকে মশাল মিছিল করে তাঁরা পৌঁছবেন কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত। এই কর্মসূচির মাধ্যমে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে প্রতিবাদের অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তাঁদের কথায়, নির্যাতনের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ শুধু চিকিৎসক মহল নয়—সমাজের সম্মিলিত প্রতিবাদের রূপ হোক।

৯ অগাস্ট রাখীবন্ধনের দিন। সেই দিন সকালে সম্প্রীতির বার্তা ছড়াতে রাখীবন্ধনের আয়োজন করেছে জুনিয়র ডাক্তাররা। এরপর বিকেলে তাঁরা আবারও আরজি কর মেডিক্যালে প্রতিবাদ জমায়েতের ডাক দিয়েছেন। তাঁদের বার্তা স্পষ্ট—“হুমকির সংস্কৃতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। শুধু চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীরাই নন, সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এই প্রতিবাদে অংশ নিতে হবে।”

আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় দোষী হিসেবে কেবল সঞ্জয় রায়কেই চিহ্নিত করেছে কলকাতা পুলিশ ও সিবিআই। শিয়ালদহ আদালত তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশও দিয়েছে। তবে নির্যাতিতার পরিবার, আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসক এবং বহু সাধারণ মানুষ মনে করেন, এই নৃশংস ঘটনায় সঞ্জয় একা দায়ী নন—পর্দার আড়ালে জড়িত রয়েছে আরও অনেকেই। সেই সমস্ত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনতে হবে—এই দাবিতে আরও জোরদার আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।

সোমবারের সাংবাদিক বৈঠকে আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম নেতা দেবাশিস হালদার জানান, প্রতিবাদ কর্মসূচি শুধু ৮ অগস্ট রাতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ৯ অগস্টেও রয়েছে একাধিক উদ্যোগ। ওই দিন সকালে রাখীবন্ধনের মাধ্যমে সম্প্রীতির বার্তা ছড়ানো হবে। বিকেলে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ‘ক্রাই অফ আওয়ার’-এর সামনে অনুষ্ঠিত হবে জমায়েত। দেবাশিস জানান, “এই জমায়েত থেকেই রাজ্যের কলেজে কলেজে চলা হুমকির সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার ডাক উঠবে।”

জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন এবার শুধুমাত্র রাত দখল কিংবা জমায়েতের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না—পরিকল্পনা চলছে আরও নানা কর্মসূচির। আন্দোলনের অন্যতম মুখ দেবাশিস হালদার বলেন, “ভুলিয়ে দেওয়ার একটা প্রবণতা চলছে চারপাশে। কিন্তু আমাদের অস্ত্র হলো স্মৃতি। আমরা কেউ ভুলিনি, কাউকে ভুলতেও দেব না—সেই বার্তাই পৌঁছে দিতেই আবার রাস্তায় নামার ডাক।” ৮ ও ৯ অগস্টের কর্মসূচিকে তাঁরা কোনও নির্দিষ্ট নাম দিতে চান না। ‘রাত জাগা’ হোক বা ‘রাত দখল’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাঁদের বার্তা একটাই: প্রতিবাদের আলো জ্বালাতে সেই রাতেও রাস্তায় থাকছেন তাঁরা।