RG Kar Sanjay Rai : বেকসুর খালাস করা হোক! কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ সঞ্জয় রায়, ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি বুধবার

11

ডিজিটাল ডেস্ক, ৯ জুলাই : বেকসুর খালাসের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আরজি কর কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়। গত ১৭ জুন তিনি হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন। তাঁর আবেদনের শুনানি আগামী বুধবার বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে হওয়ার কথা রয়েছে (RG Kar Sanjay Rai)।

তবে মামলাটি এখনই গ্রহণ করা হবে কি না, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নোটিস দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত হয়েছে আগামী ১৬ জুলাই।

প্রসঙ্গত ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার হন সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়। শুরুতে কলকাতা পুলিশ এবং পরে সিবিআই তদন্তের দায়িত্ব নিলেও, আর কাউকে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। পরবর্তীতে শিয়ালদহ আদালত সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। সিবিআই বারবার তাঁর ফাঁসির আবেদন জানালেও, আদালত সেই আবেদন গ্রহণ করেনি। সাধারণ মানুষও ফাঁসির দাবিতে সরব হন। তবে আদালতের মত, এই ঘটনাটি ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ (rarest of the rare) নয়, তাই ফাঁসির রায় দেওয়া হয়নি।

গত জানুয়ারি মাসে শিয়ালদহ আদালত সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয়, যার পর থেকে তিনি জেলবন্দি। যদিও আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মা সঞ্জয়ের ফাঁসি চাননি। তাঁদের দাবি, এই ঘটনায় সঞ্জয় ছাড়া আরও কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে, এবং তদন্তকারীদের তাদের শনাক্ত করতে সঞ্জয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন।

সঞ্জয় রায়কে শাস্তি দেওয়া হলেও, আরজি কর কাণ্ডে প্রতিবাদী জুনিয়র চিকিৎসক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের একাংশের বিশ্বাস—আসল অপরাধীরা এখনও ধরা পড়েনি। তাঁদের মতে, এই ঘটনায় সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে, আগামী ৯ অগাস্ট নির্যাতিতার মৃত্যুর এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। সেই দিনকে ঘিরেই আরও জোরালো প্রতিবাদের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।

৮ ও ৯ অগাস্টের মধ্যরাতে আয়োজিত হবে ‘রাত দখল’ (Reclaim The Night) কর্মসূচি। কলেজ স্কোয়ার থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মশাল মিছিল করবেন তাঁরা। এরপর রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত তাঁরা রাস্তায় থাকবেন, প্রতীকী অবস্থান বিক্ষোভে। শিল্পী, সাহিত্যিক, ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদেরও এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।

সঞ্জয়কে শিয়ালদহ কোর্ট গত জানুয়ারি মাসে যাবজ্জীবনের জেলের সাজা দিয়েছিল। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে মামলা করেছেন ওই বরখাস্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের আইনজীবী।

শিয়ালদহ আদালতের রায় ঘোষণার পরেই সঞ্জয় রায়ের আইনজীবী সেঁজুতি চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, “আমরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হব। যে কোনও অভিযুক্ত যিনি দোষী সাব্যস্ত হন, তাঁর অধিকার রয়েছে উচ্চ আদালতে আবেদন করার। এই আবেদনের পরিকল্পনা করতে কিছুটা সময় নেব।” তিনি আরও বলেন, সঞ্জয়কে অপরাধী নয়, বরং নির্যাতিত বলেই মনে করছেন তাঁরা। সেঁজুতি চক্রবর্তীর কথায়, “আমরা সঞ্জয়কে নির্যাতিত বলেই দেখছি। হাই কোর্টে যাবই—এটা আমাদের আইনগত অধিকার। তাঁকে খালাস করাতেই উচ্চ আদালতে আবেদন করব।”