ডিজিটাল ডেস্ক ২৫শে জুলাইঃ সাতসকালে ভারী বৃষ্টিতে ভিজেছে শহর কলকাতা। নেপথ্যে ঘূর্ণিঝড় উইফা। বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় উইফা শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণাবর্ত হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঢুকে শক্তি জুগিয়ে নিম্নচাপ পরিণত হয়েছে। ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস উপকূলবর্তী জেলায়। বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন সল্টলেকের রাস্তা । আর সেই জলমগ্ন রাস্তাতেই অভিনব প্রতিবাদে শামিল হলেন বিজেপির যুব মোর্চার কর্মীরা । ইসি ব্লক ও এফডি ব্লকের মধ্যবর্তী এলাকায় জমে থাকা হাঁটুজলেই সাঁতার কাটলেন তাঁরা। যা দেখতে রাস্তায় ভিড় জমল কৌতূহলী জনতার। পরে পুলিশ এসে তাঁদের সরিয়ে দেয়(Saltlake Youth BJP)।
বিজেপির যুব নেতা সঞ্জয় পড়্যা কটাক্ষের সুরে বলেন,‘‘নিকাশি ব্যবস্থা এ রাজ্যে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। তৃণমূল সরকার ইকো সিস্টেম ধ্বংস করেছে বলেই এই অবস্থা। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাট পুকুর হয়ে যাচ্ছে। এবার থেকে সুইমিং পুলে গিয়ে সাঁতার কাটার দরকার পড়বে না, বাড়ির সামনেই রাস্তা পুকুর হয়ে যাচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, ঘটনাস্থলের কয়েকশো মিটার দূরেই রয়েছে বিধাননগর পুরনিগমের দফতর । স্থানীয়দের প্রশ্ন, পুরনিগম ও প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই কি এই দুর্দশা? তবে এ ব্যাপারে বিধাননগর পুর নিগমের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে জল জমা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন সাধারণ মানুষ। হাতে জুতো নিয়ে জল পেরিয়ে আসছিলেন এক যুবক। বললেন, “দুর্ভোগের শেষ নেই। একটু বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়। এভাবে হাতে জুতো নিয়েই অফিসে যেতে হয়।” প্রতি বছর এভাবে রাস্তায় জল জমলেও কলকাতা পৌরনিগম কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। হাতে জুতো নিয়ে জল ঠেঙিয়ে অফিসের পথে সাধারণ মানুষ ।
সল্টলেক, নিউটাউনের একাধিক জায়গায় জল জমেছে। ধীরে চলছে বাস, অটো। অন্যদিনের তুলনায় বাসও কম বলে জানালেন নিত্যযাত্রীরা। ফলে তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন। অনেকে বলছেন, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও গাড়িতে উঠতে পারেননি। গভীর নিম্নচাপের জেরে শুক্রবারও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। দুর্যোগের ফলে আরও দুর্ভোগ কি অপেক্ষা করছে? আরও বৃষ্টি হলে রাস্তা থেকে জল কখন নামবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পৌরনিগমের তরফে এই নিয়ে এখনও কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়।
মহানগরের নিকাশি ব্যবস্থার হাল যে কতটা খারাপ, সেটা এর থেকেই স্পষ্ট বলে বিরোধীরা সাফ জানাচ্ছেন। টানা ভারী বৃষ্টি হওয়ার ফলে বিভিন্ন তল্লাটের কোথাও এক হাঁটু, কোথাও এক কোমর জল দাঁড়িয়ে যায়। দিনের ব্যস্ত সময়ে রাস্তায় বেরিয়ে বিপাকে পড়েন অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে ট্যাক্সি চালকদের একাংশও বেশি ভাড়া হেঁকে বসেন কোথাও কোথাও। কাছের মেট্রো স্টেশনে পৌঁছতেও কালঘাম ছুটেছে আমজনতার। তার একটাই কারণ চতুর্দিকে জল জমে থাকা। বিরোধীদের বক্তব্য ‘কলকাতার নিকাশি ব্যবস্থা কতটা খারাপ, সেটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের সেরা বলে দাবি করে পোস্ট না–করে বাস্তবে নিকাশি ব্যবস্থা উন্নত করতে কাজ করা উচিত কলকাতা পুরসভার।’