Satyajit Ray:’ফেলুদা’স্রষ্টার বাড়ি ধুলিসাৎ ময়মনসিংহে,’সত্যজিৎ’উদ্বেগ মমতার

15

ডিজিটাল ডেস্ক ১৬ই জুলাইঃ বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায় সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের স্মৃতি জড়িত বাড়িটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রকে এই বিষয়ে নজর দেওয়ার আবেদনও করেন তিনি। ময়মনসিংহ জেলায় হরিকিশোর রায়চৌধুরী রোডে অবস্থিত এই বাড়িটি সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি। এই বাড়িটিতে থাকতেন উনিশ শতকের বিশিষ্ট সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ৷ বিশিষ্ট সাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী ও প্রকাশক ছাড়াও তিনি ছিলেন বিখ্যাত কবি সুকুমার রায়ের পিতা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের দাদু । সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোরের বাল্যকাল ও কিশোর বেলা এই বাড়িতেই কেটেছে(Satyajit Ray)।

সমাজমাধ্যমে পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন,‘‘খবরে প্রকাশ যে,বাংলাদেশের ময়মনসিংহ শহরে সত্যজিৎ রায়ের ঠাকুরদা,স্বয়ং স্বনামধন্য সাহিত্যিক-সম্পাদক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর স্মৃতিজড়িত তাঁদের পৈতৃক বাড়িটি নাকি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ভাঙার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল বলে খবর প্রকাশিত। এই সংবাদ অত্যন্ত দুঃখের।’’

সমাজমাধ্যমে ওই পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী এর পরে লিখেছেন,‘‘রায় পরিবার বাংলার সংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক। উপেন্দ্রকিশোর বাংলার নবজাগরণের একজন স্তম্ভ। তাই আমি মনে করি, এই বাড়ি বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। আমি বাংলাদেশ সরকার ও ওই দেশের সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আবেদন করব, এই ঐতিহ্যশালী বাড়িটিকে রক্ষা করার জন্য। ভারত সরকার বিষয়টিতে নজর দিন।’’

হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার ৷ কিন্তু তারপর থেকেই ওপার বাংলায় সাহিত্যিক থেকে সঙ্গীতশিল্পী,বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বাড়িঘর হামলার মুখে পড়েছে। মাসখানেক আগেই বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক ভিটেয় ভাঙচুর করেছিল দুষ্কৃতীরা। এবার সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়িও ভাঙার ঘটনাা সামনে এসেছে ৷ একইসঙ্গে বাংলা সংস্কৃতির ‘নবজাগরণ’-এর প্রতীক হিসেবে ঐতিহাসিক এই ভবনটি সংরক্ষণে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন নয়াদিল্লি। দিল্লির তরফে ময়মনসিংহের ‘ল্যান্ডমার্ক’ ভবনটি ভেঙে ফেলার পদক্ষেপকে ‘গভীর দুঃখের’ বিষয় হিসাবে বর্ণনা করে ঢাকাকে এটিকে দুই দেশের অভিন্ন সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে এটি জাদুঘর করার আহ্বান জানিয়েছে ৷ এর জন্য সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত সরকার।

সুত্রের খবর, ময়মনসিংহ শিশু অ্যাকাডেমি হিসেবে ব্যবহার করা হত জেলার সদর শহরের হরিকিশোর রায় রোডের প্রাচীন ওই বাড়ি। ২০০৭ সালের পর থেকে আর বাড়িটির কোনও ব্যবহার হয়নি। পরিত্যক্ত বাড়িটি ভেঙে তাই বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনায় কাজ শুরু করছে শিশু অ্যাকাডেমি। যা নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। ১৯৮৯ সালে তৎকালীন সেনাশাসক হুসেন মহম্মদ এরশাদের সময় ওই ভবনটি ব্যবহার শুরু করেছিল শিশু অ্যাকাডেমি। ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি, ২০০৭-এর পর থেকে বাড়িটি অব্যাবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল।