ডিজিটাল ডেস্ক, ৭ জুলাই : রাজ্য সভাপতি শমীকই, আনুষ্ঠানিক ঘোষণা সময়ের অপেক্ষা! (Shamik Bhattacharyya News) রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রে এখন একটাই প্রশ্ন—কে হচ্ছেন আগামী রাজ্য বিজেপি সভাপতি ? নাম ঘিরে জল্পনা চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। আজ,সেই সম্ভাব্য জল্পনার অবসান হয়ে গেল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
দিল্লি থেকে ফিরে এদিন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন জমা দিলেন রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য । দলের অন্দরমহলের খবর, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার নির্দেশেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন শমীক(Samik Bhattacharya)।
বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বে পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছিল গত কয়েক মাস ধরেই। সূত্রের খবর, দলের অন্দরেও অনেকেই চাইছিলেন একজন ভারসাম্যপূর্ণ, সাংগঠনিকভাবে অভিজ্ঞ মুখকে। শমীক ভট্টাচার্য সেই দৌড়ে বহু দিন ধরেই অন্যতম দাবিদার বলে মনে করা হচ্ছিল। দীর্ঘ দিন দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব সামলেছেন, পাশাপাশি সাংসদ হিসেবেও দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন রাজ্যসভায়।
দলের অন্দরমহলে কানাঘুষো—যদি কোনও বড় গোলমাল না হয়, তবে শমীক ভট্টাচার্যর নামেই এবার সিলমোহর পড়ে যেতে চলেছে। যদিও দল এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু ঘোষণা করেনি, তবে মনে করা হচ্ছে, আগামিকালই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হতে পারে।
রাজ্য বিজেপির অন্দরমহলে এখন সাজোসাজো রব। পুরনো নেতৃত্বকে সরিয়ে শমীক ভট্টাচার্যর নেতৃত্বে দল কি নতুন করে সংগঠন মজবুত করার পথে হাঁটবে? লোকসভা ভোটের আগে যেভাবে রাজ্যে দল সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে শমীককেই কি নতুন ঘুঁটি হিসেবে তুলে আনছে দিল্লি?
তবে সব জল্পনার অবসান ঘটবে দলীয় ঘোষণার পরেই। আপাতত রাজনীতির অলিন্দে ঘুরছে একটাই নাম—শমীক ভট্টাচার্য।
২০১৪ সালের বিধানসভার উপনির্বাচনে জয়ী হন বসিরহাট দক্ষিণ থেকে। যদিও সেই জয়ের পর পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়েছে তাঁকে। ২০১৬ সালের ভোটে আবার বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রে দীপেন্দু বিশ্বাসের কাছে হেরে যান।
একটু পিছনের দিকে তাকালে দেখা যাবে চব্বিশ থেকেই শমীকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নতুন মোড় নিতে শুরু করে। অথচ ২০২২ সালে কোর কমিটিতেও জায়গা হয়নি তাঁর। শমীকের জন্ম ১৯৬৩ সালের ৫ নভেম্বর। সেই হিসাবে এখন বয়স ৬১। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করেন ১৯৮৮ সালে। দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। জনসংঘের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে বিজেপি। একইসঙ্গে আরএসএস-ও করতেন। হাওড়া জেলা থেকে জনসংঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেখান থেকেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘে যুক্ত হওয়া। ১৯৭১ সাল থেকেই আরএসএসে।
২০১৪ সালের বিধানসভার উপনির্বাচনে জয়ী হন বসিরহাট দক্ষিণ থেকে। যদিও সেই জয়ের পর পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়েছে তাঁকে। ২০১৬ সালের ভোটে আবার বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রে দীপেন্দু বিশ্বাসের কাছে হেরে যান। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দমদম কেন্দ্র লড়ে সৌগত রায়ের কাছে পরাজিত হন। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে রাজারহাট গোপালপুরে লড়েন। কিন্তু হেরে যান তৃণমূলের অদিতি মুন্সির কাছে।
যদিও এরইমধ্যে পৌঁছে যান সংসদে ২০২৪ সালের ৪ এপ্রিল রাজ্যসভার সাংসদ হন শমীক। ২০২৪ সালে কোর কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। দীর্ঘ প্রায় ৪৪ বছর ধরে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ঘনিষ্ট মহলে এও বলেন তিনি নাবালক বয়স থেকে বিজেপির কর্মী। কারণ তিনি ১৮ বছরের আগে থেকেই পদ্ম শিবিরের সঙ্গে যুক্ত। ১৯৮০ সালে বঙ্গ বিজেপির প্রথম রাজ্য সভাপতি প্রাপ্তি থেকে থেকে আজকের সুকান্ত মজুমদার, পূর্বতন সব রাজ্য সভাপতি হওয়ার সাক্ষী শমীক ভট্টাচার্য। আগে গুরু দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন হরিপদ ভারতী, বিষ্ণু কান্ত শাস্ত্রী, সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, তপন শিকদার, অসীম ঘোষ, তথাগত রায়, সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়, রাহুল সিনহা, দিলীপ ঘোষের মতো তাবড় তাবড় পদ্ম নেতারা। এবার সেই পদেই আসীন হতে চলেছেন শমীক।