SSC Case High Court Rejection : এসএসসির নতুন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে হওয়া সব মামলা খারিজ করে দিল হাই কোর্ট
ডিজিটাল ডেস্ক, ১৬ জুলাই : স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া ঘিরে জমা পড়া সব আবেদন খারিজ করে দিল উচ্চ আদালত (SSC Case High Court Rejection)। বুধবার রায় দিয়ে কলকাতা হাই কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল, এসএসসি-র নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে আদালত হস্তক্ষেপ করবে না।
এসএসসির নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ঘিরে কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের হয়েছিল একাধিক মামলা। বুধবার দুপুর ২টো নাগাদ বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার রায় ঘোষণা শুরু হয়। এসএসসির বিজ্ঞপ্তি ও প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে যে সব আবেদন জমা পড়েছিল, ডিভিশন বেঞ্চ সেগুলি একযোগে খারিজ করে দেয়।
রায় ঘোষণার পর রাজ্যের পক্ষের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এটা রাজ্যের একটি বড় সাফল্য। আদালত রাজ্যের সাংবিধানিক অধিকারকে স্বীকৃতি দিল। সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলেনি যে নিয়োগ শুধুমাত্র ২০১৬ সালের নিয়ম মেনে করতে হবে। আদালত অযৌক্তিক আবেদন গ্রহণ করেনি। গত ন’বছরে কত জন প্রার্থী এসেছেন, তাঁদের অবস্থাও বিচার বিবেচনায় রাখতে হবে।’
সোমবার ডিভিশন বেঞ্চে এসএসসির নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ঘিরে মামলার শুনানি শেষ হয়। রাজ্যের পক্ষে সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত এবং এসএসসির হয়ে ছিলেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করেন আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র ও বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
সওয়াল চলাকালীন এজি কিশোর দত্ত যুক্তি দেন, ২০১৬ সালের পরে ২০১৯ সালে একটি নতুন নিয়োগবিধি তৈরি হয়েছিল এবং বর্তমানে যে বিধি অনুযায়ী নিয়োগ হচ্ছে, তা ২০২৫ সালের। তাঁর বক্তব্য, ‘‘২৬ হাজার চাকরি বাতিলের রায় এসেছিল ২০১৯ সালের বিধি প্রণয়নের পর। কিন্তু তখন কেউ ওই বিধিকে চ্যালেঞ্জ করেনি। ফলে এখন কেউ এসএসসির বর্তমান নিয়োগবিধিকে প্রশ্ন করতে পারে না।’’
নির্ধারিত মূল্যায়ন প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘নিয়োগপ্রক্রিয়ায় প্রার্থীদের যোগ্যতামান কী হবে, তা নির্ধারণের অধিকার নিয়োগকারী সংস্থারই থাকে। তাই কারা আবেদন করতে পারবেন, সেই সিদ্ধান্ত এসএসসির। অধিকাংশ চাকরির ক্ষেত্রেই অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়— এই নিয়োগেও শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ২০১৬ সালের চাকরিহারাদের জন্য নতুন নিয়োগপরীক্ষার বিধি প্রকাশ করেছিল এসএসসি। সেই নতুন পরীক্ষাবিধিতে একাধিক পরিবর্তন আনা হয়, যা নিয়েই হাই কোর্টে মামলা হয়। মামলাকারীদের দাবি ছিল, নিয়োগপ্রক্রিয়ার বিধি ২০১৬ সালের নিয়ম মেনেই চালু করতে হবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, নতুন বিধিতে লিখিত পরীক্ষার পূর্ণমান বাড়িয়ে ৫৫ নম্বর থেকে ৬০ নম্বর করা হয়। শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে নম্বর কমিয়ে ৩৫ থেকে ১০ নম্বর করা হয়। ইন্টারভিউ, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং ‘লেকচার ডেমনস্ট্রেশন’-এর জন্য বরাদ্দ রাখা হয় সর্বোচ্চ ১০ নম্বর করে। পাশাপাশি, এসএসসি জানায়— ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারির হিসাব অনুযায়ী যাঁদের বয়স সর্বোচ্চ ৪০ বছর, শুধু তাঁরাই এই নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
বুধবার শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাই কোর্ট এসএসসির এই নয়া সিদ্ধান্তকে বৈধতা দিল এবং মামলাকারীদের আপত্তি খারিজ করে দেয়।