ডিজিটাল ডেস্ক, ১৪ জুলাই : এসএসসি-র নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ঘিরে মামলার শুনানি সোমবার শেষ হয়েছে। রাজ্য সরকার, এসএসসি কমিশন ও চাকরিপ্রার্থীদের তিনপক্ষের বক্তব্য শোনেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ। তবে এদিন রায় ঘোষণা না করে তা স্থগিত রেখেছে আদালত (SSC Recruitment Update)।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করা হয়েছে—এই অভিযোগ তুলে এসএসসি-র (SSC) নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত সাফ জানান, নিয়োগ কোন বিধি অনুযায়ী হবে, তা নির্ধারণ করার অধিকার চাকরিপ্রার্থীদের নেই। রাজ্যের যুক্তি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কোথাও স্পষ্টভাবে বলা হয়নি যে নিয়োগ শুধু ২০১৬ সালের বিধি অনুসারে হতে হবে। বর্তমানে কমিশনের কাছে তিনটি কার্যকর বিধি রয়েছে—২০১৬, ২০১৯ এবং ২০২৫ সালের বিধি। কমিশন যেকোনও একটি বিধি বেছে নিতে পারে, তবে সেটি যেন চাকরিপ্রার্থীদের স্বার্থকে সামনে রেখেই হয়। যদি কমিশন মনে করে ২০২৫ সালের বিধিই সবচেয়ে উপযুক্ত, তাহলে কোনও চাকরিপ্রার্থীর তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার নেই—এমনটাই যুক্তি রাজ্যের।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার হাই কোর্টে শুনানিতে বলেন, “কেউ চাইলেই কোনও বিধিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে না। আগে দেখতে হবে, তিনি আদৌ সেই বিধির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন কি না।” তিনি আরও মন্তব্য করেন, “এই ধরনের একের পর এক মামলার জেরে গত কয়েক বছর ধরে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে। অথচ নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদেরও তো কাজের সুযোগ দেওয়া দরকার। যদি আগের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় থাকা প্রার্থীরা যোগ্য হন, তাহলে ভয় কিসের? প্রতিযোগিতায় অংশ নিন।” কমিশনের পক্ষ থেকে আরও সাফ জানানো হয়, তাদের অধিকার রয়েছে সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেওয়ার। প্রশ্ন তোলা হয়—১৮০০ জন ‘চিহ্নিত অযোগ্য’ প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার পর শুধু নম্বরের ভিত্তিতে বাকিদের সরাসরি নিয়োগপত্র দেওয়া উচিত? কেউ যদি মাত্র ১০, ১২ বা ১৫ নম্বর পান, তাঁকেও কি নিযুক্ত করতে হবে?—এই যুক্তি তুলে ধরেই কমিশনের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন আইনজীবী।
চাকরিহারাদের পক্ষের আইনজীবী হাই কোর্টে বলেন, “বিধি সংশোধন করবে কি না, সেটা এসএসসির নিজস্ব বিষয়। তবে বর্তমানে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার মূল কারণ এসএসসি-রই ভুল। এখন তারা ইচ্ছাকৃতভাবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করছে। কারণ, সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলেনি যে নতুন নিয়োগ শুরু হলে এসএসসি যোগ্যতার মান পরিবর্তন করতে পারবে।” তিন পক্ষ—রাজ্য, কমিশন ও চাকরিপ্রার্থীদের যুক্তি শোনার পর বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ আপাতত রায়দান স্থগিত রেখেছে।