ডিজিটাল ডেস্ক, ১৬ মে : রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে চার সপ্তাহের মধ্যে সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা (ডিএ) এর ২৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে (Supreme Court DA)। সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা। মামলাটির পরবর্তী শুনানি আগামী আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত হবে।
রাজ্য সরকারি কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় হারে বর্ধিত মহার্ঘ্য ভাতা (ডিএ) পাওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এই বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে, এবং ইতিমধ্যে ১৮ বার মামলার শুনানি পিছিয়ে গেছে। শুক্রবার আবারও মামলাটি বিচারপতি সঞ্জয় করোল ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে ওঠে। শুনানির শুরুতেই বিচারপতি সঞ্জয় করোল রাজ্যকে নির্দেশ দেন, “বহুদিন ধরে বিষয়টি আটকে আছে, এবার ৫০ শতাংশ ডিএ পরিশোধ করুন।” তবে রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি এর জবাবে জানান, “৫০ শতাংশ ডিএ পরিশোধ করা সম্ভব নয়, এতে রাজ্যের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।” বিচারপতি পালটা বলেন, “এগুলি তো আপনাদেরই কর্মচারী, তাই অসুবিধা হওয়া উচিত নয়।”
রাজ্যের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয় যে, “সরকারি কর্মীদের জন্য মহার্ঘ্য ভাতা (ডিএ) সাংবিধানিক অধিকার নয়।” তবে সুপ্রিম কোর্ট পালটা যুক্তি দেয়, “সাংবিধানিক অধিকার না হলেও, দীর্ঘদিন ধরে টাকা না দেওয়া কোনো যুক্তিযুক্ত পদক্ষেপ নয়।”
রাজ্যের আর্থিক অবস্থা এবং সরকারি কর্মচারীদের পরিস্থিতি বিবেচনা করে শীর্ষ আদালত অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেয় যে, চার সপ্তাহের মধ্যে ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ পরিশোধ করতে হবে। আদালত আরও পর্যবেক্ষণ করে যে, হাই কোর্টের সিদ্ধান্ত যথাযথ ছিল। মামলার পরবর্তী শুনানির সময়ই বাকি বিষয়গুলির নিষ্পত্তি হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী আগস্ট মাসে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সন্তুষ্ট ডিএ আন্দোলনকারীরা। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ এক সংবাদমাধ্যমকে জানান, “রাজ্য সরকার এতদিন কর্মচারীদের প্রাপ্য মহার্ঘভাতা স্বীকার করতে চাইছিল না। তবে শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশে স্বীকৃতি পাওয়া গেল যে, এটি আমাদের অধিকার। আশা করি, চূড়ান্ত রায়ের মাধ্যমে পুরো ডিএ পরিশোধ হবে।” প্রসঙ্গত, বর্তমানে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ১৮ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছেন, যেখানে কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের তুলনায় এই ফারাক ৩৫ শতাংশ।
Comments are closed.