Supreme Court on SSC : উত্তরপত্রে কারচুপি থাকলে পরীক্ষায় বসতে পারবেন না, ‘অযোগ্য’দের আর্জি খারিজ করে সুপ্রিম বার্তা

6

ডিজিটাল ডেস্ক, ২৩ মে : যাঁদের উত্তরপত্র বা ওএমআর শিটে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, এই শিক্ষকরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন না এবং তাঁদের বেতনও বন্ধ থাকবে। নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির চাকরিহারা শিক্ষকদের একটি অংশ নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আবেদন জানিয়েছিলেন, কিন্তু শুক্রবার তাঁদের আবেদন খারিজ করেছে আদালত (Supreme Court on SSC)।

শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নির্দেশের উপর কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না। ফলে, কারচুপির প্রমাণ থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় সুযোগ দেওয়া হবে না।

গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট এসএসসি-র ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করার নির্দেশ দেয়, যার ফলে চাকরি হারান ২৫,৭৩৫ জন। আদালত জানায়, কমিশনকে নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এবং যাঁরা ‘দাগি’ বা ‘অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত হয়েছেন, তাঁদের বেতনও ফেরত দিতে হবে। এই ব্যক্তিরা নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় আর অংশ নিতে পারবেন না।

তবে নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির কিছু চাকরিহারা শিক্ষক দাবি করেন, তাঁরা এই ‘দাগি’দের তালিকায় পড়েন না। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা সাদা খাতা জমা দেননি বা প্যানেলের বাইরে থেকে চাকরি পাননি, বরং তাঁদের উত্তরপত্রে কিছু কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। তাই তাঁরা পুনরায় পরীক্ষায় বসতে চান এবং নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ না-হওয়া পর্যন্ত বেতন পেতে চান।

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, ৩ এপ্রিলের রায়ে কোনও পরিবর্তন করা হবে না। মামলাকারীদের উদ্দেশে বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, “রায় ঘোষণার পর এখন কীভাবে যোগ্য বা অযোগ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে?”

আগের দিন বিচারপতি কুমারের বেঞ্চ ‘র‌্যাঙ্ক জাম্প’ করে চাকরি পাওয়া আবেদনকারীদের মামলাও খারিজ করে দেয়। মেধাতালিকায় পিছিয়ে থাকলেও অন্যদের টপকে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিদের নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অনুমতি নেই বলে আদালত জানিয়ে দেয়। বিচারপতির বক্তব্য ছিল, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার দেওয়া নির্দেশ যথার্থ এবং এতে কোনও সংশোধনের প্রয়োজন নেই। আদালত স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, ‘র‌্যাঙ্ক জাম্প’ করে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিরা নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় বসতে পারবেন না। এবার নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশের ‘অযোগ্য’ আবেদনকারীদের আবেদনও একইভাবে খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।

মামলাকারীদের হয়ে সওয়াল করেন মুকুল রোহতগি ও করুণা নন্দী। তাঁদের যুক্তি ছিল, সুপ্রিম কোর্ট যাঁদের ‘দাগি’ বলে চিহ্নিত করেছে, তাঁদের মধ্যে তিন ধরনের চাকরিপ্রাপক রয়েছেন—এক, যাঁরা প্যানেল বহির্ভূত ভাবে চাকরি পেয়েছেন, দুই, যাঁরা মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন, এবং তিন, যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। শুক্রবার মামলাকারীদের আইনজীবীরা দাবি করেন, তাঁদের মক্কেলরা এই তিনটি বিভাগের মধ্যে পড়েন না, ফলে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় তাঁদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে আদালত সেই আবেদন গ্রহণ করেনি।
মূল মামলাকারীদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামিম। তাঁদের যুক্তি ছিল, যাঁরা উত্তরপত্রে কারচুপির মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা ‘দাগি অযোগ্য’দের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত। আদালতও এই ব্যাখ্যার সঙ্গে একমত হয়ে আবেদন খারিজ করে দেয়।

Comments are closed.