Review Petition of SSC case at Supreme Court : ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন রাজ্যের

8

ডিজিটাল ডেস্ক, ৪ মে: গত মাসে শীর্ষ আদালতের রায়ে রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী রাতারাতি চাকরি হারান। ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেনিয়ম ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে উঠছে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের পৃথক করা কেন সম্ভব হয়নি? যদি এই বাছাই প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন হতো, তবে শুধুমাত্র ‘অযোগ্য’ প্রার্থীরাই চাকরি হারাতেন, আর ‘যোগ্য’ প্রার্থীদের অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে হতো না। এবার সেই বিভ্রান্তি দূর করতে ও ‘যোগ্য’ প্রার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ পিটিশন) আবেদন জানাল রাজ্য সরকার এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন (Review Petition of SSC case at Supreme Court)। এই মামলার শুনানি আগামী সপ্তাহে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সূত্রের খবর, আগামী ৮ মে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এই হাইপ্রোফাইল শিক্ষক নিয়োগ মামলার শুনানি হওয়ার কথা। রাজ্য সরকার ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে আবেদনে জানানো হয়েছে, ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের তালিকা পুনরায় ভালভাবে যাচাই করে নতুন করে রায় দেওয়া হোক, অথবা অন্তত আগের রায়ে আংশিক পরিবর্তন আনা হোক। শীর্ষ আদালত এই আবেদনে কতটা সাড়া দেয়, তা এখন সকলের নজরে। ফলে আপাতত ৮ মে-র শুনানির দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন চাকরি হারানো হাজার হাজার শিক্ষক ও কর্মী।

গত ৮ এপ্রিল ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় চূড়ান্ত রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। রায়ে স্পষ্ট বলা হয়, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি হয়েছে এবং তা সঠিক নিয়ম মেনে হয়নি, ফলে গোটা নিয়োগকেই বেআইনি ঘোষণা করা হয়। ফলস্বরূপ, রাজ্যের মোট ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিল করা হয়। চাকরি হারিয়ে তীব্র হতাশায় পড়েন হাজার হাজার প্রার্থী। এরপরই তাঁদের এক বড় অংশ অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন এসএসসি অফিস, আচার্য ভবন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও শিক্ষাদপ্তরের সামনে।

প্রতিবাদকারীরা ‘যোগ্য-অযোগ্য’দের তালিকা প্রকাশ-সহ একাধিক দাবিতে সরব হন এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও এসএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকও হয়। তবে শিক্ষামন্ত্রী তাঁদের সাবধান করে বলেন, “রিভিউ পিটিশন করতে যেন কোনও বাধা না আসে, এমন কিছু করবেন না।” এরপর জেলা শিক্ষা দপ্তরে পৌঁছায় ‘যোগ্য-অযোগ্য’দের প্রাথমিক তালিকা। মুখ্যমন্ত্রী ও প্রশাসনের আশ্বাসে শেষপর্যন্ত আন্দোলন কিছুটা প্রশমিত হয়, অনেকেই আবার স্কুলে ফিরে যান মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী।

এবার রাজ্য সরকার ও এসএসসি রিভিউ পিটিশন দায়ের করায় চাকরিহারা এই প্রার্থীদের মনে ফের নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে—হয়তো হারানো চাকরি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা এখনও রয়েছে।

Comments are closed.