Trump On India Trade Deal : ভারতের সঙ্গে চুক্তি প্রায় করে ফেলেছি, শুল্করফা নিয়ে মন্তব্য ট্রাম্পের

14

ডিজিটাল ডেস্ক, ৮ জুলাই : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার বেশ কিছু দেশের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেন (Trump On India Trade Deal)। তবে আশার খবর, ভারত সম্ভবত সেই শুল্কবাণ থেকে রেহাই পেতে চলেছে। ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি খুব শীঘ্রই চূড়ান্ত হতে চলেছে। ফলে এই ঘোষণার মাঝে ইঙ্গিত মিলেছে, অতিরিক্ত শুল্কের বোঝা ভারতের উপর বর্তাবে না।

সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কড়া বার্তা দিয়েছেন—ব্রিকস জোটের সঙ্গে যুক্ত দেশগুলির উপর ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। তিনি ব্রিকসকে ‘আমেরিকাবিরোধী’ বলে কটাক্ষ করেন, যেখানে রাশিয়া, চিন, ব্রাজিল ও ভারতের মতো দেশ রয়েছে সদস্য তালিকায়। তবে চিন সম্প্রতি আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন করায়, বেজিং এই শুল্কবিধির বাইরে থাকছে। কিন্তু জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ সহ একাধিক এশীয় দেশের পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক বসানোর কথা সোমবারই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলিকে।

শুল্ক সংক্রান্ত ঘোষণা দিতে গিয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, “ব্রিটেন ও চিনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই আমাদের বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। ভারতের সঙ্গেও আলোচনায় আমরা প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “অন্যান্য দেশের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে, কিন্তু তাদের সঙ্গে চুক্তি করা সম্ভব হয়নি। তাই তাদের চিঠির মাধ্যমে জানানো হবে ঠিক কত শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।” ট্রাম্প আশ্বাস দিয়েছেন, যদি কোনও দেশ উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারে, তাহলে তাদের উপর ধার্য শুল্কের হার পুনর্বিবেচনা করা হবে। তাঁর সাফ বার্তা, “নৈতিকতা লঙ্ঘন করে কোনও দেশের উপর কর চাপানো হবে না।”

এর আগে চিনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত করার সময়, ভারতের সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়েও মন্তব্য করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, চিনের পরেই ভারত হতে পারে পরবর্তী দেশ যার সঙ্গে আমেরিকা চুক্তি সম্পন্ন করবে। তবে সেই সম্ভাবনা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।

সোমবার রাত থেকেই বাংলাদেশ-সহ ১৪টি দেশকে শুল্ক সংক্রান্ত নোটিস পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তালিকায় রয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, বসনিয়া, তাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তিউনিশিয়া, মায়ানমার, লাওস, দক্ষিণ আফ্রিকা, কাজাখস্তান ও মালয়েশিয়ার মতো দেশ। প্রতিটি দেশকে প্রায় একই ধরনের চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, আগামী ১ অগস্ট থেকে তাদের রপ্তানিপণ্যের উপর কত শতাংশ হারে শুল্ক আরোপিত হবে। ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, যদি ওই দেশগুলির কেউ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, তাহলে আমেরিকাও তার জবাবে শুল্কের হার আরও বাড়াবে।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্কযুদ্ধকে একটি কৌশলগত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। ভারতও সেই নীতির শিকার—‘পারস্পরিক শুল্ক’ নীতির আওতায় দেশের রপ্তানিপণ্যের উপর সর্বোচ্চ ২৬ শতাংশ কর আরোপ করে আমেরিকা। আজ, মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে সেই শুল্কচুক্তির মেয়াদ। এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতেই শুরু হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে আলোচনা, যা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে।