ডিজিটাল ডেস্ক, ২৬ জুলাই : গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ থেকে সরে গিয়ে নিম্নচাপ এখন ঝাড়খণ্ডে অবস্থান করছে—শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রকাশিত বুলেটিনে এমনটাই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তবে নিম্নচাপ সরে গেলেও দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টি এখনই থামছে না। উত্তরবঙ্গেও বজায় থাকবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। এছাড়া, সমুদ্র এখনও রীতিমতো উত্তাল থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ফলে মৎস্যজীবীদের জন্য জারি রয়েছে সতর্কতা ও নিষেধাজ্ঞা (Weather Update Now)।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ থেকে পশ্চিমে সরে গিয়ে নিম্নচাপ বর্তমানে অবস্থান করছে ঝাড়খণ্ড ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ এটি ছিল ঝাড়খণ্ডের ডাল্টনগঞ্জ থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে, ছত্তীসগঢ়ের অম্বিকাপুর থেকে ৮০ কিলোমিটার পূর্বে এবং মধ্যপ্রদেশের উমেরিয়া থেকে প্রায় ৩২০ কিলোমিটার পূর্বে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে শক্তিক্ষয় করে পরিণত হবে একটি সুস্পষ্ট নিম্নচাপে। এদিকে মৌসুমি অক্ষরেখা বর্তমানে অনুপগঢ়, চুরু, গ্বালিয়র, রেওয়া হয়ে উত্তর ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া ও কাঁথির উপর দিয়ে বয়ে গিয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই চলবে ঝড়বৃষ্টি। কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানানো হয়েছে বুলেটিনে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, রবিবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনা, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায় বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এই জেলাগুলিতে ইতিমধ্যেই হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
সোমবার পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায় ভারী বৃষ্টির (৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার) সম্ভাবনা রয়েছে, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। ওই দিন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পুরুলিয়াতেও ঝড়ের সম্ভাবনায় হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে। এই সব এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পাশাপাশি ঝড়ের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিলোমিটার।
মঙ্গলবার কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায় ঝড়বৃষ্টির জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান এবং নদিয়ায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টি চলবে। তবে পরিস্থিতি এখনও ততটা উদ্বেগজনক নয়, তাই সব জেলায় সতর্কতা জারি হয়নি।
উত্তর এবং মধ্য বঙ্গোপসাগরের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলের সমুদ্র থাকবে উত্তাল। সেখানে ঝোড়ো দমকা হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় পৌঁছতে পারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এই পরিস্থিতিতে মৎস্যজীবীদের রবিবার পর্যন্ত ওই এলাকায় সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
উত্তরবঙ্গের আবহাওয়াও রুক্ষই থাকবে। রবিবার উত্তরবঙ্গের আটটি জেলাতেই রয়েছে হলুদ সতর্কতা। দার্জিলিং, কালিম্পং ও কোচবিহারে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত (৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার) হতে পারে—এই দুই জেলায় জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা। সোমবার কালিম্পং, দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদহে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে এবং সেখানে হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে। বাকি জেলাগুলিতেও ঝড়বৃষ্টি চলবে, যদিও সতর্কতা জারি হয়নি। মঙ্গলবার ও বুধবার উত্তরের সব জেলাতেই বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। বৃহস্পতিবার থেকে ঝড়বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে। ওই দিন জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস।